নবী মহাম্মাদ (দঃ) এর যৌন ক্ষমতা : একটি সুপরিচিত অতিরঞ্জন

Print Friendly, PDF & Email

আমরা সাধারন মানুষ স্বভাবতই শক্তির পূজারী । সেই শক্তি সামাজিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী হতে পারে শারীরিক শক্তি, আর্থিক শক্তি, সামাজিক প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক শক্তি-এমনকি  শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ ও বিশেষ মহলের কাছে নবীর মত সম্মান ও ভক্তি লাভ করে থাকে । যদি ব্যক্তি টি হয় কোন ধর্ম গুরু , পীর মুর্শিদ বা পয়গম্বর গোছের কেও তাঁর শক্তি বুঝাতে প্রয়োজন মোজেজা বা অলৌকিকত্বের । মুসা নবীর লাঠি দিয়ে সাগরের পানি দুই ভাগ করে দেওয়া, যিশু খ্রিস্টর মৃতকে জীবিত করা বা কুষ্ঠ রোগী বা অন্ধত্ব সারিয়ে তোলা সবই এই মোজেজার উদাহরণ । হালের দেলওয়ার হোসেন সাঈদি কে চাঁদের মধ্যে দেখা যাওয়া আর অন্যান্য অসংখ্য পীর মুর্শিদ এর নানা মোজেজার দাবী আপনারা হরহামেশাই শুনে থাকেন । পীরের মুরিদরা এমন অসংখ্য মুশকিল আশান করা মোজেজার কাহিনী বলে ভক্তকুল বা সাক্ষাত প্রার্থীদের তাক লাগিয়ে দেন।  এগুলো করা হয় সুনির্দিষ্ট লক্ষ নিয়ে, আমাদের মন মগজে এক অলৌকিক মহাপুরুষ বা অসীম শক্তিমানের ধারনা তৈরি করতে। তৈরি হয় একধরণের উপকথা বা মিথ। এই মিথ চলতে থাকে বংশ পরস্পরায় আর ধর্ম গুরুরা বা অসৎ শাসকরা নিজ স্বার্থে এই মিথকে বাঁচিয়ে রাখে এর নানা ডাল পালা বিস্তার করিয়ে, এভাবেই নির্বোধ মুমিনদের চিন্তা জগতকে করে রাখে আচ্ছন্ন ।

কোন কারণে আল্লাহ যদি উনার মত পরিবর্তন করে আজকে বাংলাদেশে একজন নবী প্রেরণ করেন ( বিশেষত নাস্তিক , মুরতাদ দের সংখ্যা বৃদ্ধি ও মুমিন মুসলমানের আকুতিতে ব্যাকুল হয়ে ) এবং নয়া পয়গম্বর যদি  বায়তুল মোকাররম বা জিরো পয়েন্টে দাড়িয়ে নবুয়ত ঘোষণা করেন এবং সৌভাগ্য ক্রমে মুমিন  বান্দাদের গণপিটুনিতে নিহত না হন, তবে আপনারাই সর্ব প্রথম যে দাবীটি করবেন তা হলো মোজেজা বা অলৌকিকত্ব দেখিয়ে নবুয়তের প্রমাণ দিতে । একই মনস্তত্ত্বতে তৎকালীন আরব সমাজ নবী মোহাম্মাদের (দঃ) কাছে এই মোজেজা প্রদর্শনের দাবী তোলে । এ দিক থেকে বেচারা নবীজীর ভাগ্য মোটেও সুপ্রসন্ন ছিল না । চাঁদ দুই ভাগ করা ও মেরাজ – বোরাক পরিবহনের  কিচ্ছা খুব বেশি হালে পানি পায় নি। আর মদিনার ইয়াহুদীরা তো তাঁকে একেবারেই বিশ্বাস করে নাই । সকল ইয়াহুদী দের উচ্ছেদ বা হত্যা করা ছাড়া নবী হিসাবে মদিনাতে একক আধিপত্য লাভ নবী মোহাম্মাদের (দঃ) এর পক্ষে সম্ভব ছিলোনা।

নবী মৃত্যুর পর তাঁর মোজেজা, ক্ষমতা , দয়া- দাক্ষিণ্য ইত্যাদি সব বিষয়ের এক সুনামি শুরু হয়ে গেছে। নবীর প্রস্রাব পায়খানা মোবারকের মেশকাম্বার ঘ্রাণ ও পুষ্টিগুণের এর ওয়াজ আমরা ইতিমধ্যে শুনেছি , বড়ই আশঙ্কায় আমার দিন কাটে কবে জানি বিবি আয়েশার রজঃস্রাব সংক্রান্ত কি আয়াত নিয়ে মোল্লা সাহেবরা হাজির হন । আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ অন্তত খাদ্য বস্তু , পারফিউম বা গালে মাখা ক্রিম  থেকে দুরে থাকবেন । এই মোজেজা বা শক্তিমত্তা প্রদর্শনের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আলোচিত হচ্ছে নবীর এক রাতে নয় বা এগারো বিবির সাথে যৌনসংগম করার হাদিস এবং নবীজীর যৌন ক্ষমতা যে ৩০ জন পুরুষের সমান এই দাবী । অনেক মুমিন নবীর এই অতিমানবীয়ও মোজেজায় মুগ্ধ হয়ে বলছেন সুবহানাল্লাহ ! কেও বা নিজের দ্রুতপাতের হতাশায় ছুটছেন ১ নং মঘা ঔষধালয়ে। এবার এই দাবীটির পর্যালোচনা করা যাক।

সহি বুখারি শরীফের হাদীস

পরিচ্ছদঃ ৫/১২. একাধিকবার বা একাধিক স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হবার পর একবার গোসল করা।

২৬৮. আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের নিকট দিনের বা রাতের কোন এক সময়ে পর্যায়ক্রমে মিলিত হতেন। তাঁরা ছিলেন এগারজন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি এত শক্তি রাখতেন? তিনি বললেন, আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে, তাঁকে ত্রিশজনের শক্তি দেয়া হয়েছে। সা‘ঈদ (রহ.) ক্বাতাদাহ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন, আনাস (রাযি.) তাঁদের নিকট হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে (এগারজনের স্থলে) নয়জন স্ত্রীর কথা বলেছেন। (২৮৪, ৫০৬৮, ৫২১৫ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৬)

একথা সুবিদিত যে হাদিস সংকলন হয়েছিল নবী মৃত্যুর অন্তত দুই শত বৎসর পরে। এর সত্য মিথ্যা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে, সেটি এই লেখার উদ্দেশ্য না । উপরের হাদিসটি সহি , তবে আমি নিশ্চিত , নবীর পায়খানা মোবারক বা চন্দ্র  দ্বিখণ্ডন এর মতই এটি একটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত অতিরঞ্জন । নবী নিজে এই দাবী করেছিলেন কিনা জানি না , তবে  যৌন ক্ষমতা নিয়ে বড়াই করলে নিজেকে আল্লাহ্‌র বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত বান্দা হিসাবে দেখানো যায়। দেখা যাক এ নিয়ে নবী কিছু বলেছেন কিনা, একটি হাদিস শুনা যাক সহি বুখারি থেকেঃ

পরিচ্ছদঃ ৬০/৪০. মহান আল্লাহর বাণীঃ

৩৪২৪. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সুলায়মান ইবনু দাঊদ (আঃ) বলেছিলেন, আজ রাতে আমি আমার সত্তর জন স্ত্রীর নিকট যাব। প্রত্যেক স্ত্রী একজন করে অশ্বারোহী যোদ্ধা গর্ভধারণ করবে। এরা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। তখন তাঁর সাথী বললেন, ইন্শা আল্লাহ্। কিন্তু তিনি মুখে তা বললেন না। অতঃপর একজন স্ত্রী ছাড়া কেউ গর্ভধারণ করলেন না। সে যাও এক (পুত্র) সন্তান প্রসব করলেন যার এক অঙ্গ ছিল না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিনি যদি ‘ইন্শা আল্লাহ্’ মুখে বলতেন, তাহলে আল্লাহর পথে জিহাদ করতো। শু‘আয়ব এবং ইবনু আবূ যিনাদ (রহ.) এখানে নব্বই জন স্ত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন আর এটাই সঠিক। (২৮১৯, মুসলিম ২৭/৫ হাঃ ১৬৫৪, আহমাদ ৭১৪) আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১৮১)

সুবহানাল্লাহ! সুলায়মান নবী যদি এক রাতে নব্বই জন স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করতে পারেন, আমাদের নবীর ক্ষেত্রে তো কোম্পানির রেটে মাত্র নয় জন দাবী করা হয়েছে । আসুন এবার অঙ্ক করা যাক, না তৈলাক্ত বাঁশ ও বানরের অঙ্ক না, তবে, সহি ইসলামি সিলেবাসে এই অঙ্কটি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যে আমি দাবী উত্থাপন করেছি ।

ঐকিক নিয়মে নিম্নের অঙ্ক করুন , পূর্ণমান ১০। অকৃতকার্য হইলে ইমান হারাইয়া জাহান্নাম বাসি হইবেন।

“ ধরি সুলায়মান নবী সন্ধ্যা ৭ ঘটিকা হইতে সুবেহ সাদিক ৪ ঘটিকা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে ৯০ জন বিবির সহিত সঙ্গম করিলেন ।  অর্থাৎ ৯ ঘণ্টা বা ৫৪০ মিনিটে ৯০ জন বিবির উপর উপগত হন। অতএব, এক জন বিবির সহিত ৬ মিনিট করিয়া অঙ্গ সঞ্চালন করেন । “

অঙ্কটি করলেন, কার মনে কোন প্রশ্ন নাই যে এটি একটি সহি হাদিস । পাঠকরা গোস্তাকি নিবেন না ,আমার মত , আল্লাহর গজব প্রাপ্ত বান্দা যদি কখনো পূর্বরাগ পর্বটি কমিয়ে যৎসামান্যই  করি, তাতেও ৩০ মিনিটের আগে কর্ম হাছিল করা সম্ভব হয় না। অথচ , উপরের গাঁজাখুরি হাদিস বিনা দ্বিধায় মানতে আপনারা ১ সেকেন্ডও ভাবেন না । চিন্তা করুন,  ৯০ জন বিবি কয়েক ফুট অন্তর অন্তর পজিশন নিয়া শায়িত না থাকলে , এক ঘর থেকে অন্য ঘরে জেতেও দূরত্ব অনুযায়ী ৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত লাগতে পারে । আর জামা কাপড় খোলা আবার পরা ও অঙ্গ ধৌত করন না হয় বাদই রাখলাম। এগুলো হিসাবে নিলে বিবি প্রতি সময় ছয় মিনিট তো দুরের কথা ছয় সেকেন্ড ও হবে কিনা একটু হিসাব করুন ।

এবার আসি আমাদের নবী মোহাম্মাদের (দঃ) এর ব্যাপারে । উনি যখন ২৫বছরের যুবক তখন থেকে দুই দশক পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিবি খাদিজার ঘর জামাই , এই দীর্ঘ সময় ৩০ অশ্ব ক্ষমতা (30 horse power) নিয়ে , এক বিবি নিয়ে কিভাবে ছিলেন তা উপরওয়ালা ই বলতে পারবেন । বিবি খাদিজার  ইন্তেকালের পর ৫০ ঊর্ধ্ব বয়সে মদিনায় আসার পর নবীরে পত্নী ভাগ্য বিকাশ লাভ করে তবে একই সময়ে এক সাথে ৯ বা ১১ জন বিবি উনার দীর্ঘ সময় ছিলনা বরং দাসী বাদ দিলে পাঁচ থেকে ছয় জন বিবি বেশির ভাগ সময় একত্রে পেয়েছেন । এটিও সর্বজন বিদিত যে , উনি পালা ক্রমে বিবিদের সাথে রাত্রি যাপন করতেন, এটিই  একাধিক বিবির ক্ষেত্রে প্রচলিত আরবিয় রীতি । এটি ভঙ্গ করে, উনি রাত্রি কালীন অভিসারে বেরিয়ে যাবেন অন্য বিবিদের ঘরে আর উনার বরাদ্দ করা  বিবি এটা বিনা বাক্য বায়ে মেনে নিবেন এটা ভাবতে বেগ পেতে হয় । আকাল্মন্দ পাঠককে আর মনে করিয়ে দিতে হবে না যে এক দাসী মারিয়া কিবতিয়াকে বিবি হাফসার পালার দিনে বিছানায় নেয়ায় কি তুলকালাম কাণ্ডই না ঘটে গিয়েছিল ।  নাস্তিক্য ডট কমে  এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে লিঙ্কে দেওয়া লিখাটি পড়ে দেখতে পারেন (নবী মোহাম্মদ (দঃ) এর দাসী মারিয়া আল কিবতিয়া ও অতঃপর) ।

নবীর দ্বিতীয় বিবি সাওদা ছিলেন বয়স্কা যাকে নবী বিবি খাদিজার মৃত্যুর পর নিকাহ করেন, বলা হয়ে থাকে বিবি খাদিজার ঘরে হওয়া সন্তানদের লালন পালনের জন্য। নবী একদা বিবি সাওদাকে তালাক দিতে চাইলে তিনি নবীকে অনুনয় করেন এই বলে যে, বিবি হিসাবে উনি আর কোন অধিকার দাবি করেন না তবে নবীর বিবি হিসাবে সম্মান নিয়ে মৃত্যু বরন করতে চান , এবং তার নিজের পালাটি তিনি বিবি আয়েশাকে দিয়ে দেন এবং এভাবে তিনি নিজের বিবাহ বজায়ে রাখেন। বিবি সাওদার সাথে নবীর শারীরিক বৈবাহিক সম্পর্ক আর ছিলনা।

এ ছাড়ও, বয়স হওয়ার সাথে সাথে নবীজির কিছু সৃতি বিভ্রম শুরু হয় । বিবি আয়েশার বর্ণিত হাদিসে যার প্রমান মেলে, যেখানে, উনি কোন বিবির সাথে সঙ্গম না করেও বলতে থাকেন যে সঙ্গম উনি করে এসেছেন। এই মন বিভ্রমকে এক ইয়াহুদি মুনাফেক করতিক যাদু টোনা বা বান মারা হিসাবে উল্লেখ করা আছে । আসুন সহি বুখারির হাদিসটি দেখে নেই ঃ

পরিচ্ছদঃ ৭৬/৪৯. যাদুর চিকিৎসা করা যাবে কি না?

৫৭৬৫. ‘আয়িশাহ হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেননি। সুফ্ইয়ান বলেনঃ এ অবস্থা যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে ‘আয়িশাহ! তুমি জেনে নাও যে, আমি আল্লাহর কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বলে দিয়েছেন। স্বপ্নে দেখি  আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং আরেকজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লাবীদ ইবনু আ‘সাম। এ ইয়াহূদীদের মিত্র যুরায়ক্ব গোত্রের একজন, সে ছিল মুনাফিক। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে ‘যারওয়ান’ কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর মত, আর এ কূপের পার্শ্ববর্তী খেজুর গাছের মাথাগুলো দেখতে শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। ‘আয়িশাহ বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি এ কথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম, তিনি আমাকে আরোগ্য দান করেছেন; আর আমি মানুষকে এমন বিষয়ে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। (৩১৭৫; মুসলিম ৩৯/১৭, হাঃ ২১৮৯, আহমাদ ২৪৩৫৪) আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৪০)

এবার, বাস্তবে ফিরে আসি। দু একটি বিজ্ঞানের কথা বলি। যারা , এতক্ষণ , নবীর ৩০ অশ্ব ক্ষমতায় গর্ব বা ঈর্ষায় ভুগছিলেন, যেনে রাখুন, এক বার স্খলনের পর পুরুষের ক্ষেত্রে পুনরায় উত্থান এর পূর্বে একটি Refractory period বা সময় আছে যার পূর্বে লিঙ্গ উত্থান সম্ভব নয়, এই সময়কাল কয়েক ঘণ্টা পর্যন্তও হতে পারে। আর যারা নারীর উপর নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করেন, তাদের হতাশ করে বলতে হচ্ছে , একবার orgasm এরপর নারী অতি দ্রুত পরবর্তী orgasm এর জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে। সহজ ভাষায়, একজন নারী বরং পুরুষের চাইতে এক রাতে বেশিবার সঙ্গম করতে প্রাকৃতিক ভাবেই সক্ষম।

কথা হল, এত কিছুর পরেও, আমরা পুরুষের ইমান দণ্ডের মোজেজায় আবদ্ধ। এতে নবীর অলৌকিক ক্ষমতা বুঝাতে আমাদের ওয়াজি মোল্লা পুরুতদের বড়ই সুবিধা হয় । জনৈক ময়দান কাঁপানো ইসলামি আলিম জনাব ওলিপুরি সাহেবের ওয়াজ শুনে তো আমার আক্কেল গুড়ুম , উনি ৩০ জন পুরুষ নয় বরং বললেন চার হাজার (৪০০০) সাধারন নয়,  বাহাদুর পুরুষের যৌন ক্ষমতা নবী মুহাম্মদ (দঃ) কে দেওয়া হয়েছে, অতএব, এক জন পুরুষ যদি চার বিবি রাখতে পারে নবীর ক্ষমতা আছে ১৬,০০০ বিবি রাখার ! শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝলাম না , তবে নবীজি যে ১৬,০০০ বিবি না নিয়ে যে ইনসাফ করেছেন তার জন্য মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসলো নারায়ে তকবির।  দেখে নিন নিচের ইউটিউব এর ভিডিওটি যদি বিশ্বাস না হয়। বিশ্বাসী মুমিনগণ এই ভেবে আশ্বস্ত হতে পারেন যে এই দুনিয়ার ধ্বজভঙ্গ লিঙ্গ পরকালে ৩০ অশ্ব ক্ষমতা লাভ করে থাকবে চির উত্থিত আর তখন ৯ জন বিবি নয়  বরং ৭০ জন পবিত্র বেশ্যা হবে শয্যা সঙ্গিনী আর সুলায়মান নবীর মত ছয় মিনিট নয় বরং প্রতিটি সঙ্গমের ব্যাপ্তি হবে শত্তুর হাজার বছর ।  বলেন সোবহানাল্লাহ !

তথ্যসূত্রঃ

মওলানা ওলিপুরির ওয়াজঃ “ রসুলের শরীরে আল্লাহ চার হাজার বাহাদুর পুরুষের সেক্স পাওয়ার দান করেছিলেন”

(embed)https://www.youtube.com/watch?v=Np5WjrsAGDw(/embed)

লেখকঃ সুবচন নির্বাসনে

shubochon

A free thinking human being and humanist

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *