মুহাম্মদই কি কল্কি অবতার?
সূচিপত্র
ভূমিকা
এই বিষয়টি সর্বপ্রথম শুনেছিলাম জাকির নায়েকের একটি ভিডিও থেকে। ভিডিওটিতে জাকির নায়েক দাবী করলেন, হিন্দু ধর্মে বর্ণিত কল্কি অবতারই হচ্ছে আসলে নবী মুহাম্মদ। শুধু হিন্দু ধর্মগ্রন্থই নয়, অন্যান্য সকল ধর্মগ্রন্থেই নাকি নবী মুহাম্মদের পরিষ্কার বিবরণ দেয়া আছে। এইসব কথা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। প্রায়শই বিভিন্ন আলাপ আলোচনাতে এই প্রসঙ্গগুলো উঠে আসে, কিছু মুসলিম প্রায় মুখস্তের মতই কথাগুলো বলতে থাকেন। আমাদের সাথে বিভিন্ন আলোচনাতেও বেশ কয়েকজন এসে এই দাবীটি করেছিলেন। যখন তাদের জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কী কল্কি পুরাণ গ্রন্থটি নিজে পড়েছেন? এই প্রশ্নটির সাথে সাথেই দেখা যায়, মুসলিম এপোলোজিস্টদের মুখটি ফ্যাকাশে হয়ে যায়। কারণ এই পর্যন্ত আমি এমন কোন মুসলিম এপোলোজিস্টকে খুঁজে পাই নি, যিনি আসলেই কল্কি পুরাণ নিজে পড়ে যাচাই করে দেখেছেন। সকলেই জাকির নায়েকের মুখে শুনেই বুঝে গেছেন, কল্কি পুরাণে মুহাম্মদের কথাই বলা আছে। বিষয়টি মর্মান্তিক। আরো মর্মান্তিক হয় তখন, যখন সেই সব ইসলামিক এপোলোজিস্ট এটিও দাবী করেন, কল্কি পুরাণ পড়ে দেখারও তাদের প্রয়োজন নেই। না পড়েই উনারা নিশ্চিতভাবে জেনে গেছেন ঐ গ্রন্থে কী লেখা রয়েছে।
বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে পছন্দ মত চেরি পিক করা কিছু বক্তব্য নিয়ে পছন্দ মত মানুষকে সেখানে ফিট করে দেয়ার এই প্রবণতা যদিও নতুন কিছু নয়। নস্ট্রাডামুসের ভবিষ্যত বাণী বিষয়ে একটি বই বের হয়েছিল, সেখানে নস্ট্রাডামুসের কিছু কবিতা বা ছড়ার শব্দাবলী এদিক সেদিক করে লেখক ইতিহাসের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সাথে ফিট করে দিয়েছিলেন। আসলে, সেই ছড়াগুলো এমন ছিল যে, ইতিহাসে অসংখ্য ঘটনা বা ব্যক্তির সাথেই আসলে সেই ছড়াগুলোকে ফিট করে দেয়া যায়। প্রয়োজনমতো ছড়ার শব্দগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে গ্রহণ করে আমি নিজের নামও নস্ট্রাডামুসের কোন ছড়ার মধ্যে বের করে ফেলতে পারি। এগুলো খুব কঠিন কোন কাজ নয়। যেমন ধরুন, সেই বহু আগেই কাজী নজরুল ইসলাম তার সংকল্প কবিতার মধ্যে লিখেছেন,
পাতাল ফেড়ে নামব নীচে, উঠব আবার আকাশ ফুঁড়েঃ
বিশ্ব-জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।।
খেয়াল করে দেখুন, আজকের স্মার্টফোন, সেই ফোনে হাইস্পিড ইন্টারনেট, ওয়াইফাই, গুগল, ফেইসবুক, এগুলোর সাথে খুব সুন্দর মিল করে বলে দেয়া যায়, নজরুল সেই বহু যুগ আগেই আজকের দিনের ভবিষ্যত বাণী করে গেছেন। নইলে তিনি আপন হাতের মুঠোয় পুরে কেন বলবেন? আসলেই তো আমরা স্মার্টফোন আপন হাতের মুঠোয় পুরে পুরো পৃথিবীকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখে ফেলছি। কিন্তু আসলেও কি তা? কাজী নজরুল ইসলাম কি আদৌ সেটি বলেছিলেন?
দেখতেই পাচ্ছেন, আপনি চাইলে যেকোন কবিতা বা ছড়া বা সাহিত্যকে একটু এদিক সেদিন করে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অর্থ তৈরি করে ফেলতে পারবেন। ধর্মান্ধদের মধ্যে এই প্রবণতা খুব বেশী দেখা যায় যে, তারা তাদের পছন্দের মানুষদের বিভিন্ন জায়গাতে খুঁজে পায়। এবং শিক্ষাবঞ্চিত পিছিয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে এগুলো খুব বেশি জনপ্রিয়তাও পায়। যা তাদের আরো বেশি অশিক্ষা কুশিক্ষা এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে তোলে। এই কারণেই তারা মনে করে, নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে গিয়ে আজান শুনেছিল, বা চাঁদ দুই টুকরো হয়ে গেছে এটি নাকি নাসা স্বীকার করে নিয়েছে, ইত্যাদি। এগুলো নিয়ে আমরা প্রায়শোই হাসাহাসি করি বটে, কিন্তু এগুলো ধরে ধরে তাদের বুঝিয়ে দেয়ারও দরকার হয়। নইলে তারা মূর্খতার কুয়ো থেকে কখনই বের হতে পারবে না।
কল্কি অবতার কে?
কল্কি অবতার হচ্ছেন হিন্দুধর্মের একজন কল্পিত অবতার, যিনি কলিযুগে মানব সমাজের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন। হিন্দু ধর্ম অনুসারে, কল্কি হচ্ছেন ভগবান বিষ্ণুর সর্বশেষ রূপ। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র পুরাণ থেকে জানা যায়, কল্কি অবতার সাদা ঘোড়ার পিঠে খোলা তরবারী হাতে আবির্ভূত হবেন পাপীদের হত্যা করতে। কল্কি অবতার কলি যুগের অবসান ঘটিয়ে সত্য যুগ শুরু করবেন। কল্কি শব্দটি সময়ের রূপকার্থে ব্যবহৃত হয়। শব্দটির উৎসমূল সংস্কৃত শব্দে খুঁজে পাওয়া যায়, কলকা অর্থ অশুভ। বর্তমানে কল্কি শব্দের অনুবাদ করা হয় অশুভ ধ্বংসকারী, অজ্ঞতা ধ্বংসকারী অথবা অন্ধকার দূরকারী হিসেবে। সংস্কৃতে কল্কি শব্দের আরেকটি অর্থ সাদা ঘোড়া। উল্লেখ্য, হিন্দু ধর্ম অনুসারে কল্কি অবতার নিজেই হচ্ছেন ঈশ্বরের একটি রূপ, কোন বার্তাবাহক নন।
শুরুতেই আমরা সরাসরি কল্কি পুরাণ থেকে কল্কি অবতারের বৃত্তান্ত পড়ে নিই। যেই ছবিগুলো দেয়া হলো, সেগুলো সরাসরি কল্কিপুরাণের বাঙলা অনুবাদ থেকে নেয়া, বইটি আপনারাও ডাউনলোড করে তথ্যসূত্রগুলো যাচাই করে দেখতে পারে। [1]
উপরে বর্ণিত কল্কি পুরাণ থেকে আমরা জানতে পারি, কল্কি অবতারের বাবা বিষ্ণুযশ, মা সুমতি, জন্মের সময় বাবা মা উভয়ে কল্কি অবতারের সামনেই ছিলেন। চারজন প্রধান ব্যক্তি কল্কি অবতারকে দেখতে এসেছিল, যাদের দেখে বাবা বিষ্ণুযশ অভ্যর্থনা জানিয়েছিল।
মুহাম্মদ কি কল্কি অবতার?
জাকির নায়েক থেকে শুরু করে বহু ইসলামিক এপোলোজিস্টই হিন্দু ধর্মের কল্কি অবতারকে মুহাম্মদ হিসেবে দাবী করেছেন। এই দিক দিয়ে হিন্দুরাও কম যায় নি। হিন্দু ধর্মটি যেহেতু অন্য ধর্মগুলোর পুজনীয় লোকদেরও নিজেদের ধর্মের বলে দাবী করে থাকেন, সেই সূত্র ধরে তারা বেদবিরোধী গৌতম বুদ্ধকেও তাদের অবতার বানিয়ে ফেলেছিল। একইসাথে, যিশুখ্রিস্ট থেকে শুরু করে মুহাম্মদও হয়ে গেছেন তাদের অবতার। শুধু কী তাই? এমনকি দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত অভিনেতা রজনী কান্ত, বলিউডের অমিতাভ বচ্চন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও অনেক হিন্দু ভগবানের অবতার হিসেবে পুজা করে। হিন্দু ধর্মটিই এমন যে, তারা সবকিছুকেই নিজেদের অংশ বানিয়ে নিতে চায়। এমনকি, ভারতের নাস্তিকদের কথাও অনেকগুলো বেদে অনেকভাবে বর্ণনা করা আছে। তারাও আসলে সামগ্রিকভাবে হিন্দু দর্শনের অংশ।
বিষ্ণুযশ এবং আবদুল্লাহ
জাকির নায়েক তার বক্তব্যে বলেছেন, কল্কি অবতারের আবির্ভাব সম্পর্কে কল্কি পুরাণে বলা আছে, তার বাবার নাম হবে বিষ্ণুযশ। জাকির নায়েক বিষ্ণুযশের অনুবাদ বলেছেন, সৃষ্টিকর্তার গোলাম। নবী মুহাম্মদ এর পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ বা আবদ-আল্লাহ যার অর্থও সৃষ্টিকর্তার গোলাম বা দাস! উল্লেখ্য, আবদ শব্দের অর্থ দাস।
এখানে জাকির নায়েক যেই জোচ্চুরিটি করেছেন সেটি হচ্ছে, বিষ্ণুযশ শব্দটিকে তিনি ভুলভাবে অনুবাদ করেছেন। যশ শব্দটি বাঙলা ভাষাতেও প্রচলিত। যশ শব্দের অর্থ হচ্ছে খ্যাতি, গৌরব, বা সুনাম। আমরা অনেক সময়ই শব্দটি ব্যবহার করি, কারণ এই শব্দটি বাঙলা ভাষাতেও ঢুকে গেছে। বিষ্ণুযশ শব্দটির আসল অর্থ হচ্ছে, ঈশ্বরের গৌরব, বা ঈশ্বরের সুখ্যাতি, মোটেও সৃষ্টিকর্তার গোলাম নয়। উল্লেখ্য, যশ শব্দটি সংস্কৃত থেকে বাঙলা এবং হিন্দি ভাষায় প্রবেশ করেছে। দুইটির অর্থই এক। যেমন, ভারতের একজন বিখ্যাত পরিচালক, যশ চোপড়া। তার নামের অর্থও খ্যাতিমান। যেমন, শ্রীকৃষ্ণের পালক মায়ের নাম ছিল যশোদা। এই শব্দটি বাঙলাতেও ঢুকে গেছে।
বাংলাএর অভিধানে যশ এর সংজ্ঞা
যশ ( yaśa ) (যশস্, যশঃ) বি. কীর্তি, খ্যাতি। (সং. √ অশ্ + অস্ য্ আগম)। ̃ .কীর্তন, যশঃ-কীর্তন বি. খ্যাতি বা গৌরব প্রচার। ̃ .স্কর, -স্য বিণ. যশস্বী বা কীর্তিমান করে এমন, খ্যাতিজনক। ̃ .স্কাম বিণ. খ্যাতি কামনা করে এমন। ̃ .স্বান, স্বী (-স্বিন্), যশো-ধন বিণ. কীর্তিমান, খ্যাতিসম্পন্ন। স্ত্রী. ̃ .স্বতী, স্বিনী। যশাকাঙ্ক্ষা বি. খ্যাতির আকাঙ্ক্ষা বা আশা। যশো-গাথা, যশো-গীতি, যশো-গান বি. কীর্তির বর্ণনাপূর্ণ সংগীত। যশোদ বিণ. কীর্তিদায়ক, যশস্কর। বি. পারদ। যশোদা বিণ. (স্ত্রী.) খ্যাতিদায়িনী। বি. শ্রীকৃষ্ণের পালিকা মাতা, নন্দের স্ত্রী। যশোদা-নন্দন বি. শ্রীকৃষ্ণ। যশো-ধন বিণ বিখ্যাত, যশস্বী। যশো-ভাক (-ভাজ্) বিণ. যশ বা খ্যাতির অংশীদার। যশো-ভাগ্য বি. যশোলাভের সৌভাগ্য। যশো-মতী বি. যশোদা। যশো-রাশি বি. বহু যশ। যশো-লিপ্সা বি. খ্যাতির লোভ। যশো-হানি বি. খ্যাতিনাশ, অখ্যাতি।
সুমতি এবং আমিনা
ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, নবী মুহাম্মদের আরেকটি নাম ছিল আল আমিন, অর্থাৎ সত্যবাদী। এখানে আমিন(Arabic أمينة) শব্দটির অর্থ সত্যবাদী, বা বিশ্বাসী বা নিরাপদ। মুহাম্মদের মায়ের নাম ছিল আমিনা। অর্থাৎ সত্যবাদী বা বিশ্বাসী বা নিরাপদ নারী যার ওপর ভরসা করা যায়। জাকির নায়েক এই শব্দটির অর্থ করেছেন, পবিত্র আত্মা। এটিও এর একটি অর্থ হতে পারে। কিন্তু এটি অর্থ হলেও তা কখনোই সুমতি শব্দের অর্থ হয় না।
কল্কি অবতারের মায়ের নাম ‘সুমতি’। জাকির নায়েক ‘সু’ অর্থ করেছেন ‘শান্ত’ এবং ‘মতি’ অর্থ ‘আত্মা’। অর্থাৎ ‘সুমতি’ শব্দের অর্থ জাকির নায়েক বানিয়েছেন ‘শান্ত আত্মা’ বা ‘পবিত্র আত্মা’। অথচ, ‘সু’ শব্দের অর্থ শান্ত এমনটি কোথাও পাওয়া যায়না। বাঙলা ভাষাতেও ‘সু’ শব্দটি বহুল প্রচলিত। ‘সুমতলব’ ‘কুমতলব’ এই শব্দগুলো আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি। এর অর্থ ‘ভাল মতলব’ এবং ‘খারাপ মতলব’। ‘সু’ শব্দের অর্থ ‘ভালো’ বোঝানো হয়, ‘শান্ত’ নয় কোনভাবেই। আর ‘মতি’ শব্দের অর্থ ‘চিত্ত’, বা ‘মন’; ‘আত্মা’ নয়। আত্মা আর মন দ্বারা আলাদা অর্থ বোঝানো হয়।
কল্কির জন্মের সময় বিষ্ণুযশ
কল্কি পুরাণে কল্কি অবতারের জন্মের সময় তার বাবা মা উভয়ের উপস্থিতির কথাই কল্কি পুরাণ থেকে পাওয়া যায়। উপরে সরাসরি বই থেকে অনুবাদ দেয়া হয়েছে, বইটির ছবি সহকারে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কল্কি অবতারের পিতা-মাতা উভয়েই তার জন্মের সময় উপস্থিত। এমনকি, তার বিয়ের পরেও জীবিত ছিলেন। অথচ ইসলামের প্রায় সকল রেফারেন্স অনুসারেই, নবী মুহাম্মদ এর পিতা তার জন্মের আগেই মৃত্যুবরণ করেন এবং মাতা বাল্যকালেই মারা যায়।
আসুন সীরাত গ্রন্থ থেকে বিষয়গুলো আরো ভালভাবে দেখে নিই। আমিনার সাথে আবদুল্লাহর বিয়ের অল্প কিছুদিন পরেই আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়। কোন কোন বর্ণনায় সেটি বিয়ের অল্প কিছুদিনের মাথায়, কেউ কেউ বলেছেন আরেকটু বেশি। তবে সেটি খুবই অল্প সময়েই হয়েছিল সে বিষয়ে সকল আলেমই একমত [2]। অল্প কিছু ঐতিহাসিক দাবী করেছেন, মুহাম্মদ পিতার মৃত্যুর দুইমাস পূর্বে জন্ম নিয়েছেন, তবে সেই দাবীর পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
উপরের রেফারেন্সে দেখা যাচ্ছে, অল্প কিছু ঐতিহাসিকের মতে, নবীর জন্মের দুই মাস পরে আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়েছিল। জন্মের পরে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মুহাম্মদের দাদা আবদুল মুত্তালিব [3]
নামকরণ কে করেছিল?
কল্কি পুরাণ থেকে জানা যায়, কল্কির নামকরণ করেছিলেন চারজন প্রধান ব্যক্তি, যারা কল্কির জন্মের সময়ে এসেছিলেন। অথচ মুহাম্মদের নাম রেখেছিলেন তার দাদা আবদুল মুত্তালিব [3] ।
কল্কি ছিলেন চতুর্থ সন্তান
কল্কি পুরাণ থেকে জানা যায়, কল্কি অবতারের জন্মের আগে তার মায়ের আরো তিনজন সন্তান ছিল। তারা হচ্ছেন, কবি , প্রজ্ঞা ও সুমন্ত্র। কিন্তু ইসলামের সকল রেফারেন্সেইপরিষ্কার যে, নবী মুহাম্মদের পিতা আবদুল্লাহ তার মা আমিনাকে বিয়ের অল্প কিছুদিন পরেই বিদেশ ভ্রমণে যায় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। অন্য কোন সন্তান হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। আসুন কল্কি পুরাণ থেকে এটি সরাসরি দেখে নিই [4],
বিবাহ ও স্ত্রীদের সংখ্যা
কল্কি পুরাণ অনুসারে কল্কি বৃহদ্রথ রাজকন্যা পদ্মাকে বিবাহ করবেন।অন্যত্র বলা হয়েছে, আরেকজন স্ত্রীর নাম হচ্ছে রমা। কল্কি পুরাণে বলা হচ্ছে,
मत्तो विद्यां शिवाद् अस्त्रं लब्ध्वा वेद-मयं शुकम्।
सिंहले च प्रियां पद्मां धर्मान् संस्थापयिष्यसि।। ১:৩:৯ ततो दिग्-विजये भूपान् धर्म-हीनान् कलि-प्रियान्।
निगृह्य बौद्धान् देवापिं मरुञ् च स्थापयिष्यसि।। ১:৩:১০ श्रुत्वेति वचनं कल्किः शुकेन सहितो मुदा।
जगाम त्वरितो ऽश्वेन शिव-दत्तेन तन्मनाः।। ২:১:৩৯ समुद्र-पारम् अमलं सिंहलं जलसंकुलम्। («=सिंहलद्वीप»)
नाना-विमान-बहुलं भास्वरं मणि-काञ्चनैः।। ২:১:৪০ प्रासादसदनाग्रेषु पताका-तोरणाकुलम्।
श्रेणी-सभा-पणाट्ताल-पुर-गोपुर-मण्दितम्।। ২:১:৪১
আসুন সরাসরি বই থেকে দেখি [5] [6], ,
অপরদিকে নবী মুহাম্মদ অনেকগুলো বিবাহ করেছেন, দাসী সঙ্গমও করেছেন। তার স্ত্রী ও দাসীদের লিস্ট দেয়া হচ্ছে,
- খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (৫৯৫-৬১৯)
- সাওদা বিনতে জামআ (৬১৯-৬৩২)
- আয়িশা (৬১৯-৬৩২)
- হাফসা বিনতে উমর (৬২৪-৬৩২)
- জয়নব বিনতে খুযায়মা (৬২৫-৬২৭)
- উম্মে সালামা হিন্দ বিনতু আবি উমাইয়া (৬২৯-৬৩২)
- জয়নব বিনতে জাহশ (৬২৭-৬৩২)
- জুওয়াইরিয়া বিনতে আল-হারিস (৬২৮-৬৩২)
- রামালাহ বিনতে আবি সুফিয়ান (৬২৮-৬৩২)
- রায়হানা বিনতে জায়েদ (৬২৯-৬৩১)
- সাফিয়া বিনতে হুওয়াই (৬২৯-৬৩২)
- মায়মুনা বিনতে আল-হারিস (৬৩০-৬৩২)
- দাসী মারিয়া আল-কিবতিয়া (৬৩০-৬৩২)
উপসংহার
উপরে যেই বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো, এছাড়া আরো অসংখ্য বিষয়াদি রয়েছে, যেগুলোতে খুবই স্পষ্ট যে, মুহাম্মদের সাথে হিন্দুদের কল্কি অবতারের কোন দিক দিয়েই কোন মিল নেই। একদল মুসলিম যারা মিথ্যাচার করে হলেও নবী মুহাম্মদকে সত্য নবী হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেন, আরেকদল হিন্দু যারা যীশু বুদ্ধ সহ সকলকেই হিন্দু ধর্মের অংশ বলে প্রমাণের চেষ্টা করেন, উভয় পক্ষই নানা ধরণের গোজামিল দিয়ে কল্কি অবতার এবং মুহাম্মদকে মেলাবার চেষ্টা করে থাকেন। বিষয়টি আমাদের জন্য হাস্যকর, কিন্তু শিক্ষাবঞ্চিত মানুষদের জন্য মর্মান্তিক। আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা। কোন হুজুরের মুখে শুনলেই, বা জাকির নায়েকদের কাছে শুনলেই, বা কোন বইতে পড়লেই চট করে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করে দেখাকে উৎসাহিত করা। নিজে যাচাই করুন, পড়ুন, এবং সিদ্ধান্ত নিন। এটিই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র
- কল্কি পুরাণ, অনুবাদ জগন্মোহন তর্কালঙ্কার,পৃষ্ঠা ১২-১৬[↑]
- আর-রাহীকুল মাখতূম বা মোহরাঙ্কিত জান্নাতী সূধা, আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ৭৫ [↑]
- আর-রাহীকুল মাখতূম বা মোহরাঙ্কিত জান্নাতী সূধা, আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ৭৬ [↑][↑]
- কল্কি পুরাণ, অনুবাদ জগন্মোহন তর্কালঙ্কার,পৃষ্ঠা ১৭[↑]
- কল্কি পুরাণ, অনুবাদ জগন্মোহন তর্কালঙ্কার,পৃষ্ঠা ২৪ [↑]
- কল্কি পুরাণ, অনুবাদ জগন্মোহন তর্কালঙ্কার,পৃষ্ঠা ২৯৫ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"
আপনার কি জানা আছে নবী মুহাম্মাদ (সা:) একজন মেষ পালক ছিলেন ?
যে কোন বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে না- মাঠে গরু ছাগল ছড়ায় তাকে সবাই বিশ্বাসী ও সত্যবাদী হিসাবে এভাবেই চিনেছেন সে সময়ের ইতিহাসও তাই বলা আছে। ইতিহাসের তথ্য এবং প্রমাণ এটাই বলছে। আপনি কি কোরআনের এমন মূল্যবান কথাগুলো দেখে ভাবতে পারেন কোরআন- এটা একজন লিখাপড়া না জানা ব্যক্তির রচনা করা ? বিশ্বাস না হলে কোরআনের কথাগুলো দেখে বিচার করবেন একজন স্কুলে না পড়া ব্যক্তি দিয়ে। এই কথাগুলো একজন রাখাল কি আদৌ রচনা করার ক্ষমতা রাখে ?
নবী মুহাম্মদ জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে তার স্ত্রীকে বলেছিলেন আমার এক বন্ধু আছে আমি তার কাছে যেতে চাই।অথবা বন্ধু তুমি আমাকে ক্ষমা করো আমি তোমার কাছে যেতে চাই।দেখুন তো যিনি আল্লাকে সর্বশক্তিমান মনে করেন এবং নিজেকে আল্লার বান্দা মনে করেন তিনি কেন আল্লাহকে বন্ধু বলবেন।এটা তো কোরান মাফিক নয়।আসলে তিনি তার এক বন্ধু যিনি হেরা গুহায় বসে আধ্যাত্মিক সাধনা করে কিছু আয়াত লিখতেন তাকে মহাম্মদ গুহায় হত্যা করে তার লেখাগুলিকে আল্লার বলে চালিয়ে দিলেন।আর নিজে মুর্খ বলে প্রচার করলেন।আসলে মহাম্মদের কীর্তিকলাপ অনেক গভীর জলের মাছের মতো।তার অনুশোচনার জন্যই বলতে বাধ্য হয়েছিলেন বন্ধু তোমার কাছে আমাকে নিয়ে যাও।এই বন্ধু আর কেউ নয় তার ইহুদি বন্ধু যাকে হেরা পাহারে মহাম্মদ হত্যা করে তার লেখা বইটি দখল করেছিলেন।
এই ঘটনা তো আজকেই প্রথম জানলাম, যদি কোনো রেফারেন্স দিতেন, সুবিধা হত
are you block headed? 😃😃😃
Wow!
Thank you
For help me out.
Refference diye kotha bolben….bon boi e kothai ache 😠😠
Authentic writer er ‘kalki purana’ dekhun….
Choto khato writer er kalki puran use korben na..
Amio too chaile kalki puran ar Bengali version likhte pari ar sob tottho nijer ichha moto likhte pari…tai bole seta grohon kora jai na.
ঠিক বলছেন ভবিষ্য পূরান আপনার মতো লেখক দ্বারা লিখিত হয়েছে
আরো অনেক পয়েন্ট বাদ থেকে গেল
যদি কুরআন কোনো ইহুদিই লিখে থাকে তাহলে সে নিজেই নিজেদেরকে পথভ্রষ্ট বলবে কেনো ?
je eei boiti likhechen. allah take khoma koruk…se bolche eei boiti ekjon ehudi likhechen.. tahle ooi ehudi allah k kivabe ccinlo musa nobi o mohammad j allahr nobi egula kno lilkhbe .. r apni eei kotha kothay pailn j mohammad tar bondhu k hotta kore boi ti niyeche …
tar mane apni ooi guhay chilen…allah firaun er mto apnake hedayet dibena tai hyto allahr sothik gean theke apnake boncito koreche …
apni ki onudhabon koren na ekmatro kuryan batito kono dhormiyo boi jukti O nirvul noy …
Just sharing… 🤔
Predictions on Kalki
It is time that will prove and publish the truth regarding KOLKI AVATAR. LAKUM DINUKUM WALIYADIN. The Almighty God will solve the disagreements between you and us very soon.
আবদুল্লাহ বা আব্দ আল্লাহ আল্লাহ অর্থ আল্লাহর দাস।
গডকে আল্লাহ নামে অবিহিত কে করেছিল?
মুহম্মদ (সা:)? নাকি আগে থেকেই “আল্লাহ” শব্দটা ছিল?
বেঞ্জামিন ওয়াকারের লিখা ফাউন্ডেশন অফ ইসলাম বইয়ে এটা নিয়ে কিছু লিখা আছে কিন্তু বইটার লিখা গুলো কতটুকু একাডেমিক্যালি গ্রহনযোগ্য সেটা জানি না।
এ নিয়ে একটা লিখা আশা করছি।