পৃথিবী আগে সৃষ্টি নাকি মহাকাশ?
সূচিপত্র
- 1 ভূমিকা
- 2 প্রাচীন মত বা ধারণাসমূহ
- 3 পৃথিবী নামক গ্রহটির সৃষ্টি ও বয়স
- 4 আসমান বা মহাকাশ বা মহাবিশ্ব সৃষ্টি
- 5 পৃথিবী স্থির এবং নড়াচড়া করে না
- 6 আসমান ও পৃথিবীর সৃষ্টি একই দিনে?
- 7 কোরআনে পৃথিবী ও মহাবিশ্ব সৃষ্টি
- 8 বিভিন্ন অনুবাদে পৃথিবী ও মহাকাশ
- 9 হাদিসে পৃথিবী ও মহাকাশ সৃষ্টি
- 10 তাফসীরে পৃথিবী ও মহাকাশ সৃষ্টি
- 11 সূর্যের আগেই গাছপালা সৃষ্টি?
- 12 উপসংহার
- 13 তথ্যসূত্র
ভূমিকা
সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ নিজেদের মহাবিশ্বের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কল্পনা করে আনন্দ পেতো। তারা মনে করতো, তারাই সবকিছুর কেন্দ্র, তাদের জন্যেই এই এতবড় মহাবিশ্ব, গ্রহ নক্ষত্র সবকিছু! প্রাচীনকালের সেই ধারণার ওপর ভিত্তি করেই এনাক্সিমেন্ডার (৬১০-৫৪৬ খ্রিস্টপূর্বের) নামের একজন বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক সর্বপ্রথম একটি মহাবিশ্বের ধারণা দেন যেখানে পৃথিবীকে মহাবিশ্বের কেন্দ্রে শূণ্যে ভাসমান এবং স্থির হিসেবে ধরে নেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বহু জোতির্বিজ্ঞানীগণ নানা গবেষণা এবং নতুন নতুন তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু পৃথিবীতে সবচাইতে প্রভাববিস্তারকারী মতবাদই ছিল পৃথিবীকে মহাবিশ্বের কেন্দ্র এবং মহাবিশ্বের অন্যান্য সবকিছুর তুলনায় আদিমতম সৃষ্ট বস্তু কল্পনা করে। ইসলামের দলিলপত্র নিয়ে গবেষণা করলেও ঠিক একই বিষয় পাওয়া যায়। কোরআন, হাদিস এবং ইসলামের ক্লাসিক্যাল তাফসীরসমূহ অনুসারে, জমিন বা পৃথিবীর সৃষ্টি এবং মহাকাশের অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্র ইত্যাদি, এদের মধ্যে কোনটি পূর্বে বা আগে সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন ইসলামিস্ট বিভিন্ন সময়ে নানারকম মিথ্যাচার করেন। ইসলামিক মিথলজি অনুসারে, আল্লাহ পাক পৃথিবী এবং মহাকাশ একই সাথে সৃষ্টি করেন, কিন্তু মহাকাশ শুরুতে ছিল ধোঁয়ার আকার, অর্থাৎ গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্র তখনো তৈরি হয় নি। সেই সময়ে আল্লাহ পৃথিবীকে তৈরি, সেখানে গাছপালা ও প্রাণিকুল সৃষ্টিতে মন দেন। সর্বশেষে আদমকে সৃষ্টির পরেই তিনি মহাকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন এবং আসমানকে সাত আসমানে পরিণত করে প্রদীপ অর্থাৎ সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্র স্থাপন করেন। এই লেখাটিতে এই বিষয়ে রেফারেন্সগুলো একত্র করা হলো, পরবর্তীতে তাদের উত্তরগুলো একসাথে দেয়ার জন্য। আধুনিক বৈজ্ঞানিক ধারণা এবং ইসলামের ধারণার মিল অমিলগুলো আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন।
প্রাচীন মত বা ধারণাসমূহ
মানুষ যেহেতু পৃথিবীতে বসবাস করে, মানুষের ধ্যান ধারণা প্রাচীনকালে নিজ নিজ অভিজ্ঞতা থেকেই উদ্ভুত হতো। তারা এই পৃথিবীতে সবকিছুই নিচের দিকে পড়ে যেতে দেখে আসছে আদিমকাল ধরেই। কোনকিছু শূণ্যে ভাসমান থাকা সম্ভব, এটি তাদের ধারণা ছিল না। কারণ নিচের দিকে পড়ার কারণটি তারা তখনও জানতো না। মহাকাশে সব যে শূণ্যে ভাসমান থাকতে পারে, মধ্যাকর্ষণ বলের কারণে সেগুলোর নিচের দিকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, এটি বুঝতে প্রাচীন কালের মানুষের অনেক সময় লেগেছে।
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টোকার্স অব সামোস, অ্যারিস্টোটল এবং টলেমি মহাবিশ্ব সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রদান করেন। তাদের মডেলে এই পৃথিবীই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সমস্ত গ্রহ, সূর্য ও নক্ষত্ররা ঘুরছে। টলেমির ভূ-কেন্দ্রিক ধারণা প্রায় ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ধারণা ছিল। তবে, গ্রীক দার্শনিক ফিলোলাস (খৃ:পূ: ৪৭০-৩৮৫) এবং অ্যারিস্টোকার্স পৃথিবীর মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থানের ধারণার বিরোধিতা করেছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী (৩১০-২৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) সামোস-এর অ্যারিস্টোকার্স (Aristarchus of Samos) একটি সূর্যকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের প্রস্তাব করেন। তিনিই প্রথম উল্লেখ করেন পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর এবং সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে।
পৃথিবী নামক গ্রহটির সৃষ্টি ও বয়স
পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। এটি সৌরজগতের চারটি কঠিন গ্রহের অন্যতম। পৃথিবীর অপর নাম “বিশ্ব” বা “নীলগ্রহ”। আজ থেকে প্রায় ৪৫৪ কোটি বছর আগে পৃথিবী গঠিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর থেকে বহু পুরনো এবং বয়ষ্ক গ্রহ বিজ্ঞানের জগতে খুবই সাধারণ বিষয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ট্রাপিস্ট-১ (ইংরেজি: TRAPIST-1) এর গ্রহগুলোর কথা।
TRAPIST-1 একটি অতি-শীতল বামন তারকা, যা 2MASS J23062928-0502285, হিসেবেও পরিচিত। তারকাটি পৃথিবী থেকে ৩৯ আলোকবর্ষ (১২ পার্সেক; ৩৭০ পেটামিটার)দূরে কুম্ভ নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত । এটি ২০১৫ সালে চিলির লা সিলা মানমন্দিরে মাইকেল গিলনের নেতৃত্বে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল ‘ট্রানজিট ফটোমেট্রি’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে TRAPPIST (Transiting Planets and Planetesimals Small Telescope)নামক দূরবীক্ষণযন্ত্র ব্যবহার করে বামন তারকাটির চারপাশে প্রদক্ষিণরত পৃথিবীর সমান আকারের তিনটি গ্রহ আবিষ্কার করে । ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর চারপাশে আরো চারটি বহির্গ্রহ আবিষ্কারের ঘোষণা দেয় ।TRAPPIST ছাড়াও প্যারানালে অবস্থিত Very Large Telescope এবং নাসার Spitzer Space Telescope ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন যে , আবিষ্কৃত সাতটি গ্রহের মধ্যে কমপক্ষে তিনটি অথবা সবগুলোই বামন তারকাটির প্রাণমণ্ডলে অবস্থিত ।
আরো পড়ুনঃ The TRAPPIST-1 Planets Are Older Than Earth
এবারে জেনে নিন, মহাবিশ্বে যতটুকু মানুষ জানতে পেরেছে, তার মধ্যে প্রাচীনতম গ্রহটি সম্পর্কে। প্রায় ১৩ বিলিয়ন বছর আগের এই গ্রহটির সম্পর্কে পড়ুন এখান থেকেঃ Oldest Known Planet Identified
আসমান বা মহাকাশ বা মহাবিশ্ব সৃষ্টি
পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত গ্রহ , সূর্য ও অন্যান্য তারা ও নক্ষত্র, জ্যোতির্বলয়স্থ স্থান ও এদের অন্তর্বর্তীস্থ গুপ্ত পদার্থ , ল্যামডা-সিডিএম নকশা , তমোশক্তি ও শূণ্যস্থান (মহাকাশ) – যেগুলো এখনও তাত্ত্বিকভাবে অভিজ্ঞাত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয় – এমন সব পদার্থ ও শক্তি মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব বা বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড। বর্তমান বিশ্বতত্ত্বের মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের বর্তমান বয়েস ১৩.৭৫ বিলিয়ন বা ১,৩৭৫ কোটি বছর। অর্থাৎ, মহাবিশ্ব সৃষ্টির পরে ৯২১ কোটি বছর পৃথিবী বলে কোন গ্রহের অস্তিত্ব ছিল না। এই সময়ে মহাবিশ্বে অসংখ্য গ্রহ নক্ষত্রের উদ্ভব এবং ধ্বংস ঘটেছে, যখন পৃথিবীর জন্মও হয় নি।
শুরুতেই জেনে নিই, এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে মহাবিশ্ব এবং পৃথিবীর উদ্ভব সম্পর্কে বিজ্ঞান কী বলছে।
পৃথিবী স্থির এবং নড়াচড়া করে না
কোরআনে খুব পরিষ্কারভাবেই পৃথিবীকে স্থির এবং নড়াচড়া করে না বলে ঘোষনা করা হয়েছে। অথচ আমরা জানি, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘূর্ণায়মান এবং নিজ অক্ষের ওপরও সে ঘুরছে, অনেকটা নিচের ছবির মত।
আল্লাহই আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন যাতে ও দু’টো টলে না যায়। ও দু’টো যদি টলে যায় তাহলে তিনি ছাড়া কে ও দু’টোকে স্থির রাখবে? তিনি পরম সহিষ্ণু, পরম ক্ষমাশীল।
— Taisirul Quran
আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে সংরক্ষণ করেন যাতে ওরা স্থানচ্যূত না হয়, ওরা স্থানচ্যূত হলে তিনি ব্যতীত কে ওদেরকে সংরক্ষণ করবে? তিনি অতি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।
— Sheikh Mujibur Rahman
নিশ্চয় আল্লাহ আসমানসমূহ ও যমীনকে ধরে রাখেন যাতে এগুলো স্থানচ্যুত না হয়। আর যদি এগুলো স্থানচ্যুত হয়, তাহলে তিনি ছাড়া আর কে আছে, যে এগুলোকে ধরে রাখবে? নিশ্চয় তিনি পরম সহনশীল, অতিশয় ক্ষমাপরায়ণ।
— Rawai Al-bayan
নিশ্চয় আল্লাহ্ আসমানসমূহ ও যমীনকে ধারণ করেন, যাতে তারা স্থানচ্যুত না হয়, আর যদি তারা স্থানচ্যুত হয়, তবে তিনি ছাড়া কেউ নেই যে, তাদেরকে ধরে রাখতে পারে [১]। নিশ্চয় তিনি অতি সহনশীল, অসীম ক্ষমাপরায়ণ।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
(কুরআন ৩৫ঃ৪১)
কোরআনে এটিও বলা আছে যে, পৃথিবীর পর্বতমালার কারণে পৃথিবী ঢলে পড়ছে না। এর অর্থ হচ্ছে, পাহাড় পর্বত না থাকলে পৃথিবীর ঢলে পড়ার সম্ভাবনা ছিল!
তিনি আকাশমন্ডলী নির্মাণ করেছেন স্তম্ভ ছাড়া যা তোমরা দেখছ। তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন দৃঢ়ভাবে দন্ডায়মান পর্বতমালা যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে নড়াচড়া না করে আর তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সকল প্রকার জীবজন্তু, আর আমিই আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, অতঃপর তাতে উদ্গত করি যাবতীয় কল্যাণকর উদ্ভিদ।
— Taisirul Quran
তিনি আকাশমন্ডলী নির্মাণ করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। তিনিই পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পবর্তমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্ব প্রকার জীব-জন্তু এবং আমিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে এতে উদ্ভব করি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদ।
— Sheikh Mujibur Rahman
তিনি খুঁটি ছাড়া আসমানসমূহ সৃষ্টি করেছেন, যা তোমরা দেখছ, আর যমীনে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পাহাড়, যাতে তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে না পড়ে, আর তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন প্রত্যেক প্রকারের প্রাণী; আর আসমান থেকে আমি পানি পাঠাই। অতঃপর তাতে আমি জোড়ায় জোড়ায় কল্যাণকর উদ্ভিদ জন্মাই।
— Rawai Al-bayan
তিনি আসমানসমূহ নির্মাণ করেছেন খুঁটি ছাড়া—তোমরা এটা দেখতে পাচ্ছ; তিনিই যমীনে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পর্বতমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সব ধরনের জীব-জন্তু। আর আমরা আকাশ হতে বারি বর্ষণ করি তারপর এতে উদ্গত করি সব ধরণের কল্যাণকর উদ্ভিদ।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
(কুরআন ৩১ঃ১০)
আসুন তাফসীরে ইবনে কাসীর থেকে বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে পড়ি, [1]
জাকারিয়া আল-কাজউইনি হচ্ছেন ত্রয়োদশ শতাব্দীর ইসলামি স্বর্ণযুগের একজন ফারসী জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তিনি ইরানের কাজউইন শহরে ৬০০ হিজরি/ ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নবী মুহাম্মাদের একজন বিশিষ্ট সাহাবী আনাস ইবনে মালিকের বংশধর। উনার গ্রন্থ The Wonders of Creation, Translated into Turkish from Arabic. Istanbul: ca. 1553 থেকে আমরা পৃথিবী ও মহাবিশ্বের ইসলামিক ধারণা পাই নিচের ছবিটির মত।
এবারে আসুন শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেদ আল উসাইমীন রচিত ফতোয়ায়ে আরকানুল ইসলাম থেকে একটি বিখ্যাত ফতোয়া দেখে নিই, [2] [3]
প্রশ্ন: (১৬) সূর্য কি পৃথিবীর চার দিকে ঘুরে?
উত্তর: মান্যবর শাইখ উত্তরে বলেন যে, শরী‘আতের প্রকাশ্য দলীলগুলো প্রমাণ করে যে, সূর্যই পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরে। এ ঘুরার কারণেই পৃথিবীতে দিবা-রাত্রির আগমণ ঘটে। আমাদের হাতে এ দলীলগুলোর চেয়ে বেশি শক্তিশালী এমন কোনো দলীল নেই, যার মাধ্যমে আমরা সূর্য ঘূরার দলীলগুলোকে ব্যাখ্যা করতে পারি। সূর্য ঘুরার দলীলগুলো হলো আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَإِنَّ ٱللَّهَ يَأۡتِي بِٱلشَّمۡسِ مِنَ ٱلۡمَشۡرِقِ فَأۡتِ بِهَا مِنَ ٱلۡمَغۡرِبِ﴾ [البقرة: ٢٥٨]
“আল্লাহ তা‘আলা সূর্যকে পূর্ব দিক থেকে উদিত করেন। তুমি পারলে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫৮] সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠার মাধ্যমে প্রকাশ্য দলীল পাওয়া যায় যে, সূর্য পৃথিবীর উপর পরিভ্রমণ করে।
২) আল্লাহ বলেন,
﴿فَلَمَّا رَءَا ٱلشَّمۡسَ بَازِغَةٗ قَالَ هَٰذَا رَبِّي هَٰذَآ أَكۡبَرُۖ فَلَمَّآ أَفَلَتۡ قَالَ يَٰقَوۡمِ إِنِّي بَرِيٓءٞ مِّمَّا تُشۡرِكُونَ ٧٨﴾ [الانعام: ٧٨]
“অতঃপর যখন সূর্যকে চকচকে অবস্থায় উঠতে দেখলেন তখন বললেন, এটি আমার রব, এটি বৃহত্তর। অতপর যখন তা ডুবে গেল, তখন বলল হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা যেসব বিষয়ে শরীক কর আমি ওসব থেকে মুক্ত।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৭৮]
এখানে নির্ধারণ হয়ে গেল যে, সূর্য অদৃশ্য হয়ে যায়। একথা বলা হয় নি যে, সূর্য থেকে পৃথিবী ডুবে গেল। পৃথিবী যদি ঘূরত তাহলে অবশ্যই তা বলা হত।
৩) আল্লাহ বলেন,
﴿وَتَرَى ٱلشَّمۡسَ إِذَا طَلَعَت تَّزَٰوَرُ عَن كَهۡفِهِمۡ ذَاتَ ٱلۡيَمِينِ وَإِذَا غَرَبَت تَّقۡرِضُهُمۡ ذَاتَ ٱلشِّمَالِ﴾ [الكهف: ١٧]
“তুমি সূর্যকে দেখবে, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বাম দিকে চলে যায়।” [সূরা কাহাফ, আয়াত: ১৭] পাশ কেটে ডান দিকে বা বাম দিকে চলে যাওয়া প্রমাণ করে যে, নড়াচড়া সূর্য থেকেই হয়ে থাকে। পৃথিবী যদিনড়াচড়া করত তাহলে অবশ্যই বলতেন সূর্য থেকে গুহা পাশ কেটে যায়। উদয় হওয়া এবং অস্ত যাওয়াকে সূর্যের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এটা থেকে বুঝা যায় যে, সূর্যই ঘুরে। পৃথিবী নয়।
৪) আল্লাহ বলেন,
﴿وَهُوَ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلَّيۡلَ وَٱلنَّهَارَ وَٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَۖ كُلّٞ فِي فَلَكٖ يَسۡبَحُونَ ٣٣﴾ [الانبياء: ٣٣]
“এবং তিনিই দিবা-নিশি এবং চন্দ্র-সূর্য সৃষ্টি করেছেন। সবাই আপন আপন কক্ষ পথে বিচরণ করে।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৩৩]
ইবন আব্বাস বলেন, লাটিম যেমন তার কেন্দ্র বিন্দুর চার দিকে ঘুরতে থাকে, সূর্যও তেমনিভাবে ঘুরে।
৫) আল্লাহ বলেন,
﴿يُغۡشِي ٱلَّيۡلَ ٱلنَّهَارَ يَطۡلُبُهُۥ حَثِيثٗا﴾ [الاعراف: ٥٤]
“তিনি রাতকে আচ্ছাদিত করেন দিনের মাধ্যমে, দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পিছনে আসে।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৪]
আয়াতে রাতকে দিনের অনুসন্ধানকারী বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অনুসন্ধানকারী পিছনে পিছনে দ্রুত অনুসন্ধান করে থাকে। এটা জানা কথা যে, দিবা-রাত্রি সূর্যের অনুসারী।
৬) আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ بِٱلۡحَقِّۖ يُكَوِّرُ ٱلَّيۡلَ عَلَى ٱلنَّهَارِ وَيُكَوِّرُ ٱلنَّهَارَ عَلَى ٱلَّيۡلِۖ وَسَخَّرَ ٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَۖ كُلّٞ يَجۡرِي لِأَجَلٖ مُّسَمًّىۗ أَلَا هُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡغَفَّٰرُ ٥﴾ [الزمر: ٥]
“তিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিযুক্ত করেছেন। প্রত্যেকেই বিচরণ করে নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত। জেনে রাখুন, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫]
আয়াতের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে, পৃথিবীর উপরে দিবা-রাত্রি চলমান রয়েছে। পৃথিবী যদি ঘুরতো তাহলে তিনি বলতেন, দিবা-রাত্রির উপর পৃথিবীকে ঘূরান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “সূর্য এবং চন্দ্রের প্রত্যেকেই চলমান”। এ সমস্ত দলীলের মাধ্যমে জানা গেল যে, সুস্পষ্টভাবেই সূর্য ও চন্দ্র এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল করছে। এ কথা সুস্পষ্ট যে, চলমান বস্তুকে বশীভুত করা এবং কাজে লাগানো একস্থানে অবস্থানকারী বস্তুকে কাজে লাগানোর চেয়ে অধিক যুক্তিসঙ্গত।
৭) আল্লাহ বলেন,
﴿وَٱلشَّمۡسِ وَضُحَىٰهَا ١ وَٱلۡقَمَرِ إِذَا تَلَىٰهَا ٢﴾ [الشمس: ١، ٢]
“শপথ সূর্যের ও তার কিরণের, শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পশ্চাতে আসে।” [সূরা আশ-শামস, আয়াত: ১-২]
এখানে বলা হয়েছে যে, চন্দ্র সূর্যের পরে আসে। এতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সূর্য এবং চন্দ্র চলাচল করে এবং পৃথিবীর উপর ঘুরে। পৃথিবী যদি চন্দ্র বা সূর্যের চার দিকে ঘুরত, তাহলে চন্দ্র সূর্যকে অনুসরণ করতনা। বরং চন্দ্র একবার সূর্যকে, আর একবার সূর্য চন্দ্রকে অনুসরণ করত। কেননা সূর্য চন্দ্রের অনেক উপরে। এ আয়াত দিয়ে পৃথিবী স্থীর থাকার ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করার ভিতরে চিন্তা-ভাবনার বিষয় রয়েছে।
৮) মহান আল্লাহ বলেন,
﴿وَٱلشَّمۡسُ تَجۡرِي لِمُسۡتَقَرّٖ لَّهَاۚ ذَٰلِكَ تَقۡدِيرُ ٱلۡعَزِيزِ ٱلۡعَلِيمِ ٣٨ وَٱلۡقَمَرَ قَدَّرۡنَٰهُ مَنَازِلَ حَتَّىٰ عَادَ كَٱلۡعُرۡجُونِ ٱلۡقَدِيمِ ٣٩ لَا ٱلشَّمۡسُ يَنۢبَغِي لَهَآ أَن تُدۡرِكَ ٱلۡقَمَرَ وَلَا ٱلَّيۡلُ سَابِقُ ٱلنَّهَارِۚ وَكُلّٞ فِي فَلَكٖ يَسۡبَحُونَ ٤٠﴾ [يس: ٣٨، ٤٠]
“সূর্য তার নির্দিষ্ট অবস্থানে আবর্তন করে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর নির্ধারণ। চন্দ্রের জন্যে আমি বিভিন্ন মঞ্জিল নির্ধারিত করেছি। অবশেষে সে পুরাতন খর্জুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়। সূর্যের পক্ষে চন্দ্রকে নাগাল পাওয়া সম্ভব নয়। রাতের পক্ষেও দিনের অগ্রবতী হওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে।” [সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ৩৮-৪০]
সূর্যের চলা এবং এ চলাকে মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর নির্ধারণ বলে ব্যাখ্যা করা এটাই প্রমাণ করে যে, সূর্য প্রকৃতভাবেই চলমান। আর এ চলাচলের কারণেই দিবা-রাত্রি এবং ঋতুর পরিবর্তন হয়। চন্দ্রের জন্য মঞ্জিল নির্ধারণ করার অর্থ এ যে, সে তার মঞ্জিলসমূহে স্থানান্তরিত হয়। যদি পৃথিবী ঘুরত, তাহলে পৃথিবীর জন্য মঞ্জিল নির্ধারণ করা হত। চন্দ্রের জন্য নয়। সূর্য কর্তৃক চন্দ্রকে ধরতে না পারা এবং দিনের অগ্রে রাত থাকা সূর্য, চন্দ্র, দিন এবং রাতের চলাচলের প্রমাণ বহন করে।
৯) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আবু যরকে বলেছেন,
«أَتَدْرِي أَيْنَ تَذْهَبُ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ فَتَسْتَأْذِنَ فَيُؤْذَنُ لَهَا وَيُوشِكُ أَنْ تَسْجُدَ فَلَا يُقْبَلَ مِنْهَا وَتَسْتَأْذِنَ فَلَا يُؤْذَنَ لَهَا يُقَالُ لَهَا ارْجِعِي مِنْ حَيْثُ جِئْتِ فَتَطْلُعُ مِنْ مَغْرِبِهَا»
“হে আবু যর! তুমি কি জান সূর্য যখন অস্ত যায় তখন কোথায় যায়? আবু যার বললেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় ‘আরশের নিচে গিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং পুনরায় উদিত হওয়ার অনুমতি চায়। অতঃপর তাকে অনুমতি দেওয়া হয়। সে দিন বেশি দূরে নয়, যে দিন অনুমতি চাবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না। তাকে বলা হবে যেখান থেকে এসেছ, সেখানে ফেরত যাও। অতঃপর সূর্য পশ্চিম দিক থেকেই উদিত হবে।”[1]
এটি হবে কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে। আল্লাহ সূর্যকে বলবেন, যেখান থেকে এসেছ সেখানে ফেরত যাও, অতঃপর সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, সূর্য পৃথিবীর উপরে ঘুরছে এবং তার এ ঘুরার মাধ্যমেই উদয়-অস্ত সংঘটিত হচ্ছে।
১০) অসংখ্য হাদীসের মাধ্যমে জানা যায় যে, উদয় হওয়া, অস্ত যাওয়া এবং ঢলে যাওয়া এ কাজগুলো সূর্যের সাথে সম্পৃক্ত। এগুলো সূর্য থেকে প্রকাশিত হওয়া খুবই সুস্পষ্ট। পৃথিবী হতে নয়। হয়তো এ ব্যাপারে আরো দলীল-প্রমাণ রয়েছে। সেগুলো আমার এ মুহূর্তে মনে আসছেনা। তবে আমি যা উল্লেখ করলাম, এ বিষয়টির দ্বার উম্মুক্ত করবে এবং আমি যা উদ্দেশ্য করেছি, তা পূরণে যথেষ্ট হবে। আল্লাহর তাওফীক চাচ্ছি!
[1] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: বাদউল খালক; সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ঈমান
আসমান ও পৃথিবীর সৃষ্টি একই দিনে?
কোরআনে পরিষ্কারভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসমান বা মহাকাশে আমরা যা দেখি সেসব এবং জমিন, অর্থাৎ পৃথিবীকে একই দিনে বা একই সময়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, এগুলোর বয়স হচ্ছে একই, বা এদের বয়সে কোন পার্থক্য নেই। বিষয়টি পরিষ্কারভাবে একটি মস্তবড় বৈজ্ঞানিক ভুল। কারণ আমরা আধুনিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার থেকে জানি, মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রায় নয় বিলিয়ন বছর পরে পৃথিবী নামক গ্রহটির উদ্ভব ঘটে। এর পূর্বে পৃহিবী নামক কোন কিছুর কোন অস্তিত্ব ছিল না। নিচে এই বিষয়ে কোরআনের আয়াত এবং প্রাসঙ্গিক তাফসীর দেয়া হচ্ছে [4] –
আসমান-যমীন সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কিতাবে (লৌহ মাহফুজে) মাসগুলোর সংখ্যা হল বার। তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস। এটা হল সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন। কাজেই ঐ সময়ের মধ্যে নিজেদের উপর যুলম করো না। মুশরিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করে। জেনে রেখ, আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন।
— Taisirul Quran
নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি। এর মধ্যে বিশেষ রূপে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। অতএব তোমরা এ মাসগুলিতে (ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে) নিজেদের ক্ষতি সাধন করনা, আর মুশরিকদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
— Sheikh Mujibur Rahman
নিশ্চয় মাসসমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে, (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য থেকে চারটি সম্মানিত, এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন যুলম করো না, আর তোমরা সকলে মুশরিকদের সাথে লড়াই কর যেমনিভাবে তারা সকলে তোমাদের সাথে লড়াই করে, আর জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
— Rawai Al-bayan
নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টির দিন থেকেই [১] আল্লাহ্র বিধানে [২] আল্লাহ্র কাছে গণনায় মাস বারটি [৩], তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস [৪], এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন [৫]। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করো না এবং তোমরা মুশরিকদের সাথে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
— Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria
Indeed, the number of months with Allah is twelve [lunar] months in the register of Allah [from] the day He created the heavens and the earth; of these, four are sacred.1 That is the correct religion [i.e., way], so do not wrong yourselves during them.2 And fight against the disbelievers collectively as they fight against you collectively. And know that Allah is with the righteous [who fear Him].
— Saheeh International
তাফসীর গ্রন্থগুলোতেও এই বিষয়গুলো খুব পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, স্বয়ং নবী এবং নবীর সাহাবীগণ অনেকেই একই বক্তব্য দিয়েছেন [5] –
ঠিক একই বিষয় এসেছে অনেকগুলো হাদিসেও। আসুন হাদিসগুলো দেখি, [6] [7]
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫২/ তাফসীর
পরিচ্ছেদঃ ২৩৯৮. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ নিশ্চয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গননায়, মাস বারোটি। তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান (৯ঃ ৩৬) القيم শব্দটি قائم (প্রতিষ্ঠিত) অর্থে ব্যবহৃত হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৪৩০৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪৬৬১ – ৪৬৬২
২৩৯৭. অনুচ্ছেদ: আল্লাহর বাণীঃ সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে দাগিয়ে দেয়া হবে তাদের কপাল, তাদের পাঁজর এবং তাদের পৃষ্ঠদেশ, বলা হবেঃ এগুলো হল তা, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং যা তোমরা জমা করে রাখতে তার সাদ গ্রহণ কর। (৯: ৩৫)
আহমাদ ইবন শু’আয়ব ইবন সা’ঈদ (রহঃ) … খালিদ ইবনু আসলাম (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম। তখন তিনি বললেন, এ আয়াতটি যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বের। এরপর যাকাতের বিধান অবতীর্ণ হলে আল্লাহ তা সম্পদের পরিশুদ্ধকারী রূপে নির্ধারণ করেন।
৪৩০৫ আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) … আবূ বকর (রাঃ) কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আল্লাহর যেদিন আসমান যমীন সৃষ্টি করে সেদিন যেভাবে কাল (যামানা) ছিল তা আজও অনুরূপভাবে বিদ্যমান। বারোমাসে এক বছর, তন্মধ্যে চার মাস পবিত্র। যার তিন মাস ধারাবাহিক যথা যিলকাদ, যিলহাজ্জ ও মুহাররম আর মুযার গোত্রের রজব যা জামিদিউস সানী ও সাবান মাসদ্বয়ের মধ্যবর্তী।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১৬। হজ্জ
পরিচ্ছেদঃ ৮২. মক্কার হারামে হওয়া, হারামের অভ্যন্তরে ও উপকণ্ঠে শিকার কার্য চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ, এখানকার গাছপালা উপড়ানো ও ঘাস কাটা নিষেধ
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৩১৯৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৩৫৩
৩১৯৩-(৪৪৫/১৩৫৩) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) ….. ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাহ (মক্কা) বিজয়ের দিন বলেছেনঃ হিজরাতের আর প্রয়োজন নেই, কিন্তু জিহাদ ও নিয়্যাত অব্যাহত থাকবে। তোমাদেরকে যখন জিহাদের আহবান জানানো হয় তখন জিহাদে যোগদান কর। মক্কাহ (মক্কা) বিজয়ের দিন তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তা’আলা এ শহরকে সম্মানিত করেছেন- যেদিন তিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকে। অতএব কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা এ শহরের মর্যাদা ও সম্মান অক্ষুন্ন রাখবেন। তিনি এ শহরে আমার পূর্বে আর কারও জন্য যুদ্ধ বৈধ করেননি। আমার জন্য মাত্র এক দিনের কিছু সময় তিনি এখানে যুদ্ধ বৈধ করেছিলেন। অতএব তথায় যুদ্ধ বিগ্রহ করা হারাম। আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক কিয়ামত পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার কারণে এখানকার কোন কাঁটাযুক্ত গাছ উপড়ানো যাবে না, এখানকার শিকারের পশ্চাদ্ধাবণ করা যাবে না, এখানকার পতিত জিনিস তোলা যাবে না। তখন “আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! কিন্তু ইযখির (লম্বা ঘাস) সম্পর্কে (অনুমতি দিন)। কারণ তা স্বর্ণকার ও তাদের ঘরের কাজে লাগে। তিনি বললেন, কিন্তু ইযখির (তোলার অনুমতি দেয়া হল)। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩১৬৮, ইসলামীক সেন্টার ৩১৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
কোরআনে পৃথিবী ও মহাবিশ্ব সৃষ্টি
এবারে আসুন, এই সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতগুলো দেখে নিই।
তোমাদের জন্য তিনি ভূ-মন্ডলের যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেন, অতঃপর নভোমন্ডলের যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেন, অতঃপর নভোমন্ডলের প্রতি দৃষ্টি দিয়া ইহাকে সাত স্তরে বিভক্ত করিয়াছেন, তিনিই সকল বস্তু সম্পর্কে পরিজ্ঞাত।
কুরআন ২ঃ২৯
বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থীর কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।
তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।
অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।
কুরআন ৪১ঃ৯-১২
বিভিন্ন অনুবাদে পৃথিবী ও মহাকাশ
ইসলামের দাবী অনুসারে, আসমান বা মহাকাশের যাবতীয় বস্তু ও পৃথিবী একই সময়ে সৃষ্টি হলেও, পৃথিবীকে আল্লাহপাক আগে সজ্জিত করেন। সেই সময়টুকুতে আসমান ছিল একটি ধুম্রকুঞ্জ। পৃথিবী সজ্জিত করার পরে আল্লাহ আসমানের দিকে মন দেন এবং আসমানকে সজ্জিত করেন। এরপরে তিনি নিকটবর্তী আসমানে প্রদীপ বা সূর্যের মত নক্ষত্র, তারা ইত্যাদি তৈরি করেন। আসুন, বিষয়গুলো কোরআনের কয়েকটি অনুবাদ থেকে দেখে নিই।
হাদিসে পৃথিবী ও মহাকাশ সৃষ্টি
এবারে আসুন দেখা যাক, সহিহ হাদিস কী বলে। উল্লেখ্য, অনেকেই দাবী করেন যে, ছয় দিনে মহাবিশ্ব সৃষ্টির ছয়দিন বলতে নাকি ছয় যুগ বা ছয় কাল বোঝানো হয়েছে। অথচ সহিহ হাদিসে একদম শনি রবি সোম বার উল্লেখ করেই দিনের হিসেব করা হয়েছে। যা থেকে নিঃসন্দেহে বোঝা যায়, ঐ ছয় দিন আসলে পৃথিবীরই দিন। তাই এই বিষয়ে মিথ্যাচার করার আর কোন উপায় নেই।
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৫২। কিয়ামাত, জান্নাত ও জান্নামের বর্ণনা
পরিচ্ছদঃ ১. সৃষ্টির সূচনা এবং আদাম (আঃ) এর সৃষ্টি
৬৯৪৭-(২৭/২৭৮৯) সুরায়জ ইবনু ইউনুস ও হারূন ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ….. আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তা’আলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন এবং এতে পর্বত সৃষ্টি করেন রবিবার দিন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি বিপদাপদ সৃষ্টি করেন। তিনি নূর সৃষ্টি করেন বুধবার দিন। তিনি বৃহস্পতিবার দিন পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৭৯৭,ইসলামিক সেন্টার ৬৮৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৩/ কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ
পরিচ্ছদঃ ২. সৃষ্টির সূচনা এবং আদম (আঃ) এর সৃষ্টি
৬৭৯৭। সুরায়জ ইবনু ইউনুস ও হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তাআলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন। রোববার দিন তিনি এতে পর্বত সৃষ্টি করেন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি আপদ বিপদ সৃষ্টি করেন। বুধবার দিন তিনি নূর সৃষ্টি করেন। বৃহস্পতিবার দিন তিনি পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর তিনি আদম (আলাইহিস সালাম) কে সৃষ্টি করেন। অর্থাৎ জুমুআর দিনের সময়সমূহের শেষ মুহূর্তে (মাখলূক) আসর থেকে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি সৃষ্টি করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
তাফসীরে পৃথিবী ও মহাকাশ সৃষ্টি
এবারে, সর্বাধিক প্রখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে ইবনে কাসীরে সুরা বাকারার ২৯ নম্বর আয়াত সম্পর্কে কী বলা হয়েছে।
এবারে, প্রখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে ইবন আব্বাসে সুরা বাকারার ২৯ নম্বর আয়াত সম্পর্কে কী বলা হয়েছে।
এবারে, প্রখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে জালালাইনে সুরা বাকারার ২৯ নম্বর আয়াত সম্পর্কে কী বলা হয়েছে।
এবারে, মা’আরেফুল কোরআনে সুরা বাকারার ২৯ নম্বর আয়াত সম্পর্কে কী বলা হয়েছে।
এবারে, সর্বাধিক প্রখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে ইবনে কাসীরে সুরা ফুসসিলাতের ৯-১২ নম্বর আয়াত সম্পর্কে কী বলা হয়েছে।
সূর্যের আগেই গাছপালা সৃষ্টি?
নিচের আয়াতগুলো মন দিয়ে পড়ুন। এখানে বলা হচ্ছে, আল্লাহ পৃথিবীর উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন, এরপরে পৃথিবীতে খাদ্যের ব্যবস্থা করলেন। অর্থাৎ গাছপালা পশুপাখী তৈরি করলে। সেই সময়ে আকাশ ছিল ধুম্রকুঞ্জ। এরপরে তিনি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা অর্থাৎ সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্র দ্বারা সুশোভিত করলেন। অর্থাৎ, ইসলাম অনুসারে সূর্যের সৃষ্টি পৃথিবীর গাছপালা সৃষ্টির পরে। কিন্তু সূর্য না থাকলে সালোক সংশ্লেষণ ও গাছপালা কীভাবে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব, তা পাঠকের বোধবুদ্ধির ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি।
বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থীর কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।
তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।
অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।
কুরআন ৪১ঃ৯-১২
উপসংহার
উপরের কোরআন, হাদিস, তাফসীর এবং ইসলামী স্কলারদের বক্তব্য অনুসারে, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে ইসলামের দাবীগুলো যে বিজ্ঞানের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক, তা স্পষ্টভাবেই বোঝা যায়। কোরআন ও হাদিস অনুসারে, পৃথিবী ও মহাবিশ্ব একই সময়ে সৃষ্টি, যা একটি ভুল কথা। পৃথিবী নামক গ্রহটির উৎপত্তি মহাবিশ্বের উৎপত্তির কমপক্ষে ৯ বিলিয়ন বছর পরে। সেইসাথে, পৃথিবীর উপরিভাগ গঠনের পরে, পাহাড় পর্বত ও পৃথিবীতে খাদ্য অর্থাৎ গাছপালা তৈরির পরে আল্লাহ আসমানের দিকে নজর দেন, এবং সেই সময়ে আসমান ছিল ধুম্রকুঞ্জ। সেখান থেকে তিনি প্রদীপমালা অর্থাৎ নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেন। এটিও ভুল কথা। কারণ পৃথিবীর থেকে বহু প্রাচীন নক্ষত্র এবং গ্রহ পাওয়া গেছে। পৃথিবী মোটেও মহাবিশ্বের প্রাচীনতম গ্রহ নয়।
পাঠকের কাছে অনুরোধ থাকবে, প্রতিটি রেফারেন্স নিজেরাই যাচাই করে দেখুন, এবং সিদ্ধান্ত নিন। যুক্তি এবং বুদ্ধি দিয়ে, অন্ধবিশ্বাস দিয়ে কগনিটিভ বায়াসের দ্বারা নয়।
তথ্যসূত্র
- তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৯ [↑]
- ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, ঈমান, শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) [↑]
- ফতোয়ায়ে আরকানুল ইসলাম, শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেদ আল উসাইমীন, পৃষ্ঠা ৩৭, ৩৮, ৩৯ [↑]
- কোরআন, সূরা তওবা, আয়াত ৩৬ [↑]
- তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৮৩- ৫৮৬ [↑]
- সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস নম্বরঃ ৪৩০৫ [↑]
- সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী), হাদিস নাম্বারঃ ৩১৯৩ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"
ভাই অসাধারণ ব্যবচ্ছেদ
লেখাটা ভালো হয়েছে। তবে ওখানে ধুম্র কুঞ্জ নামে কী বোঝানো হয়েছে বুঝতে পারছি না!
অাদমকে যদি সৃষ্টি করে থাকেন তবে তাকে বেহেশতে সৃষ্টি করেছেনে । পৃথিবীর দিন রাত্রির সময় হিসেবে কেন বর্ণনা থাকবে? সেখানে কোন সুর্যের অালোর বর্ণনা করা হচ্ছে ?
মুমিন বিজ্ঞানীরা তো একেবারে শহীদ হয়ে যাবে। তারা না পারবে বিজ্ঞানকে অস্বীকার করতে না পারবে কোরআনকে। না পারবে বিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করতে না পারবে কোরআনকে।
আহা । দারুন । তাফসির দিয়ে মুমিনদের ফাটিয়ে দিয়েছেন । থুম্মা নিয়ে অনেক ত্যানাবাজি করে । এবার চুপ হয়ে যাবে ।
ভাই বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল। আগে সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর প্রদক্ষিনের কথা বলায় গ্যালিলিওর কি অবস্থা করা হয়েছিল মনে আছে কি? তাও আবার মাত্র ৪০০ বছর আগে ১৬ শতকের দিকে।
এখন যা না জানি তা ভবিষ্যতে জানার সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোর চেয়ে অন্য কোন কিছুর গতি দ্রুত যেদিন বের হবে, সেদিন রাতা-রাতি সমগ্র বিজ্ঞানের জগৎ পাল্টে যাবে। বিজ্ঞানের অনেক ভিত্তি অনেক সূত্র আবার নতুন করে আবিষ্কৃত হবে।
আর যখনই নতুন কিছু আবিষ্কৃত হবে আর তার সঙ্গে কোরআনের সাদৃশ্য পাওয়া যাবে, তখনই আমরা বলব একথা কোরআনে আরো অনেক আগে থেকেই ছিল, শুধু পর্যাপ্ত জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে তা আমরা বুঝতে পারিনি। সুতরাং কোরআন শরীফ constant আর বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল।
আমার কাছে আরো অনেক বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আছে,যা কুরআন শরীফের সাথে সম্পূর্ণ রূপে মিলে যায় আলহামদুলিল্লাহ। তবে তা আপনাকে জানানো সম্পূর্ণ অর্থহীন। কারণ আপনাদের মত লোকেরা জেনেও না জানার ভান করবে, বুঝেও না বুঝার ভান করবে। ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগানো যায় তবে ঘুমের ভান করা ব্যক্তিকে জাগানো যায় না। তবে যেদিন প্রকৃত অর্থেই বুঝবেন সেদিন হয়তো আর হাতে সময় থাকবে না। আমার রবের দয়া অসীম, তাই সময় থাকতে ফিরে আসুন। আল্লাহ আপনাকে হেদায়েত নসিব করুক।