বিশ্বাসের ভাইরাস
মনে হচ্ছে এটা আবার কি? আমাদের মধ্যে যারা অভিজিৎ দাদার “বিশ্বাসের ভাইরাস “ বইটি পড়েন নি, তাদের জন্য প্রযোজ্য। এই ভাইরাসটি এতই ভয়ানক যার আরগ্য কোন ওষুধ দিয়ে সম্ভব না । এই ভাইরাসের চিকিৎসা একমাত্র মানবিকতার মাধ্যমে সম্ভব । যখন ,মানুষকে আপনি ধর্ম,গোত্র, রাষ্ট্রের উর্দ্ধে রাখবেন ঠীক তখনই ভাইরাসটি মরণ কামড় দিবে ।
নিউজিল্যান্ডের Brenton Tarrant আজ আবার প্রমান করলো । সকাল থেকে আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম এটা একটি ভাইরাস এ্যাটাক । অনেকে অনেক তকমা লাগাচ্ছিল। তবে নিশ্চিত ছিলাম, এটা হলো সন্ত্রাসী হামলা । হ্যা প্রমাণ পেয়ে গেলাম এটি একটি ভাইরাস এ্যাটাক।
Brenton কিন্তু Pewdie pie কে সাবসক্রাইব করতে বলেছেন । Pewdie pie হলেন পৃথিবীর প্রথম সারির সুইডিস ইউটিউবার। হামলাকারী হলো Pewdie pie এর ভক্ত। একটা কমিউনিটি / ইউরোপিয়ান সম্পর্ক আছে বুঝা যায়। আর এখন যারা ইউটিউব নিয়মিত দেখেন তারা Pewdie pie আর T Series এর যুদ্ধ। ইউরোপিয়ান আর ভারতীয় যুদ্ধ। সাদাদের সাথে ইন্ডিয়ানদের যুদ্ধ । এমন হামলার পূর্বে যে Pewdie Pie কে সবস্ক্রাইব করতে বলে , তিনি তো তার মস্তিষ্কে বর্ণবাদিতা যে ঘোর পাক করছে তা মোটামুটি স্পষ্ট।
হামলাকারী ৪-৫ টি বন্দুক নিয়ে গিয়েছিল।বন্দুকের গায়ে লেখা ছিল”Ebba Akerlund”। লেখাটার অর্থ দাঁড়ায়..“To take revenge for Ebba Akerlund”
২০১৭ সালের ৭ই এপ্রিল উজবেকিস্তানের এক জঙ্গি সুইডেনের স্টকহোম শহরে লড়ি চালিয়ে পিষে মেরে ফেলেছিলো ৮ জনকে৷ নিহতদের মধ্যে ছিলো ১১বছর বয়সী ‘Ebba Akerlund’ নামের এক শ্রবণপ্রতিবন্ধী মেয়ে। স্কুল থেকে ফেরার পথে মায়ের সাথে তাকেও লড়ির নিচে পিষে মরতে হয়েছিলো। গতকাল ছিলো মেয়েটির জন্মদিন। সেই হত্যার রিভেঞ্জ নিতেই ‘Ebba Akerlund’র জন্মদিনকেই বেছে নেয়া হয়।একটি ধর্মীয় প্রতিশোধের কানেকশন তো পাওয়া যাচ্ছে ।
পশ্চিমের দেশগুলোতে অভিবাসন আইনে অনেক মুসলমানরা ঢুকে পড়ছে । পৃথিবীতে খৃষ্টান ধর্ম এখন সমাধির পথে । বিদেশে আগমনকারী এসব মুসলমানরা চার্চ গুলো ভাড়া নিচ্ছে কিংবা গড়ে তুলছে মসজিদ । মুসলমানদের আগ্রাসনে মানুষ ধর্মান্তরিত হচ্ছে অনেকটা না জেনে। প্রাকৃতিক ভাবে মানুষ একটা ধর্ম আকড়ে ধরে থাকতে চায় । কিন্তু ধর্মীয় বর্বরতা অধিকাংশ মানুষ না জেনেই ধর্ম গ্রহন করছে । সুতরাং বিস্তারিত না জেনেই ধর্মীয় চেতনায় অপর ধর্মীয় চেতনার মানুষকে শত্রু মনে করছে । মনুষত্ব্যের কাছে ধর্ম প্রাধন্য পাচ্ছে । হিংসা ও ঘৃনা মানুষের মনে দানা বেঁধে উঠছে । মনুষত্ব্যকে দূরে ফেলে আঁকড়ে নিচ্ছে ধর্মকে কিংবা গোত্রকে অথবা জাতিকে।আর এসবকে টিকিয়ে রাখতে মানুষ রাইফেল নিয়ে ছুটে আসে।আর নিরীহ মানুষের রক্ত ঝড়িয়ে উল্লাসে মাতে। মানবতা এখানে ধর্ষিত।আর এভাবেই একদিন পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হবে মানুষের অস্তিত্ব।
এখনই সময় এসেছে এসব প্রতিশোধ, ঘৃণা, হিংসা দ্বেষ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে । বিশ্বাসের ভাইরাস দূর করতে হবে । মুক্ত চিন্তার প্রসার ঘটাতে হবে।বের হয়ে আসতে হবে সকল ধর্মান্ধতা থেকে । বৈরতা লাঘবে মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে ।একটু ভাবুন কোনটা আপনার জন্য মঙ্গলকর বিশ্বাসের ভাইরাস নাকি মানবতা ।
বিশ্বাসের ভাইরাস মুক্ত পৃথিবী কবে হবে ?
জ্যাক পিটার
১৫/০৩/২০১৯
এপ্রিল ১৬, ২০১৯
বিষয়ঃ আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুফাচ্ছিল, আসিফ মহিউদ্দিন সাহেবগন আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যপারে সংশয়ে আছেন এবং মুমিনের কাছে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান চান। মুমিনগনও আল্লাহর আদেশ ভুলে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান দেয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছেন যেন সংশয়বাদী ও নাস্তিকদের পরকালের শাস্তি থেকে বাচানোর দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের দিয়েছেন এবং দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের শাস্তি দিবেন। কেঊ যদি আল্লাহকে বিশ্বাস না করে দোজখে যেতে চায়, দোজখে যেতে দিন, আপনার-আমার কি? আল্লাহ তায়ালা ইসলামের দিকে শুধু দাওয়াত দিতে বলেছেন, আপনি দাওয়াত দিয়েছেন, বাকী কাজ দাওয়াতিদের এবং আল্লাহ তায়ালার।
বিভিন্ন নবী-রসুলের সময় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ও নাস্তিক ঈমান আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের শর্তারোপ করেছিল, শর্ত পুরনের পরে তারা ঈমান আনেনি। তাইতো আল্লাহ তায়ালা কোরানে হযরত মোহাম্মদ (সঃআঃ) কে বলেন, এর আগে বহূ প্রমান/ মোযেযা দেখানো হয়েছে, তারা ঈমান আনেনি, ওরাও ঈমান আনবেনা।
সংশয়বাদী ও নাস্তিকদের ধারনা তারা ইসলামের সমস্ত জ্ঞান আহরন করেছেন। তাদেরকে বলুন, ইসলামে দুই ধরনের শিক্ষা আছে, একটি শরিয়ত ও অন্যটি মারিফত। তারা যদি আল্লাহকে দেখতে বা তাঁর অস্তিত্ব সম্পর্কে বুঝতে চান, তারা যেন পীরের/শিক্ষকের কাছে মারিফতের শিক্ষা নেয়। শুধু বই বা শরিয়ত দিয়ে সমস্ত শিক্ষা বুঝা বা গ্রহন করা যায়না। কিছু কিছু ব্যাপারে অবশ্যই শিক্ষক প্রয়োজন। যদি বই যথেস্ট হত, তাহলে স্কুল/কলেজের দরকার হতোনা। বিজ্ঞানের পরীক্ষার জন্য যেমন বই পড়ার পরে প্রশিক্ষক ও পরীক্ষাগার দরকার, তেমনি আল্লাহর অস্তিত্ব বোঝার জন্য দরকার “অন্তর চক্ষু” খোলা। আর অন্তর চক্ষু খোলার জন্য শরিয়ত শিক্ষার পরে দরকার মারিফতের শিক্ষা এবং মারিফত শিক্ষার জন্য দরকার পীরের/ প্রশিক্ষকের কাছে বায়াত/ প্রশিক্ষন নেয়া। এখন যদি তারা আল্লাহর অস্তিত্ব বুঝতে বা দেখতে চান, তাদের মারিফতের জ্ঞান ও প্রশিক্ষন নিতে হবে, অর্থাৎ শরিয়ত ও মারিফতের পরিপুর্ন জ্ঞান থাকা দরকার, নচেৎ তারা আল্লাহ নেই বলতে পারবেন না। যদি তারা শরিয়তের পরে মারিফতের শিক্ষা নিতে না চান, আল্লাহের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয়ে থাকেন এবং ইসলামের সমালোচনা করতেই থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে এবং তাদের কথায় কর্নপাত না করাই ভালো।
পৃথিবীতে বহু মুমিন উচ্চ পর্যায়ের চাকুরি ছেড়ে কঠিন জীবন যাপন করে মারিফতের শিক্ষা নিয়ে নিজেকে এবং আল্লাহকে চিনেছেন। তাঁরা মারিফত শিক্ষার আগে আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলেননি।
শরিয়ত ও মারিফতে আল্লাহর অস্তিত্বঃ
শরিয়তঃ শরিয়ত চুড়ান্ত বিচারকের প্রয়োজনিয়তা সম্মন্ধে শিখায়। এই বিচারক আমার গোপন, দৃশ্যমান, শক্তি প্রয়োগ, ইত্যাদির মাধ্যমে খারাপ ও ভালো কাজের খবর রাখেন। রাষ্ট্র বিচার করে স্বাক্ষীর মাধ্যমে। যে কাজের স্বাক্ষী থাকেনা বা পাওয়া যায়না, তার বিচার রাষ্ট্র করবে কিভাবে? স্বাক্ষী থাকলেও যে অপরাধীকে রাষ্ট্রের ধরার ক্ষমতা নেই, তার বিচার রাষ্ট্র করবে কিভাবে? শক্তিশালি রাষ্ট্রনায়কের বিচার দুর্বল রাষ্ট্রনায়ক করবে কিভাবে? অতএব, চুড়ান্ত বিচারকের প্রয়োজন আছে এবং সেই বিচারককে ইসলামে “আল্লাহ” বলে। এবং এই আল্লাহ ভালো কাজের জন্য রেখেছেন পুরুস্কার ও মন্দ কাজের জন্য শাস্তি। মানুষ নিজেই বেছে নিবেন তার পথ। অন্যদিকে, মনুষ্য জগতে যদি ভালো-মন্দ বলতে কিছু না থাকে নৈতিকতা থাকবেনা, কেঊ তার বাবা-মাকে চিনবেনা, তার পরিচিতি থাকবেনা, আমি যা খুশী তাই করব, জোর যার মুল্লুক তার হবে এবং চুড়ান্ত বিচারকেরও দরকার হবেনা।
মারিফতঃ বিজ্ঞানের বহু ফলাফল চোখে দেখা যায়না, স্পর্শ করা যায়না শুধু ফলাফল পরীক্ষাগারে অনুভব করা বা বোঝা যায়। তেমনি শরিয়তের ফলাফল পরীক্ষাগার নামে মারিফতের মাধ্যমে বোঝা যায় অর্থাৎ আল্লাহকে চিনা যায়।
– নাঈম