সোভিয়েত ইউনিয়ন এর সময়কালীন ১৯৪০ সালে নির্মিত ডকুমেন্টারি ফিল্মের নাম “Experiments in the Revival of Organisms” (বাংলায় “মৃতের অঙ্গ পুনরুজ্জীবন পরীক্ষা”) বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। এই ফিল্মটি দাবি করেছিল যে, সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা ক্লিনিক্যালভাবে মৃত প্রাণীদের পুনরুজ্জীবিত করার গবেষণা করছেন। এই সিনেমাটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, গবেষণাগারে এই পরিখ্যাতই চলাকালীন সময়ে এর সমস্ত ভিডিওগুলো করা হয়েছিল, এবং এই পরীক্ষাটি সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। যদিও সেই সময়ের সোভিয়েত রাজনীতির কারণে এই পরীক্ষার পরবর্তী ধাপে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
ফিল্মের শুরুতে বিশিষ্ট ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জে.বি.এস. হালডেন একটি ভূমিকা দেন। ফিল্মে দেখানো হয়েছে যে, সোভিয়েত বিজ্ঞানী সের্গেই ব্রুখোনেঙ্কো হৃদয়-ফুসফুস যন্ত্রের নকশা এবং অপারেশন করেছেন, যা পরবর্তীতে হৃদয় ভাল্বের প্রথম অপারেশনগুলোর পথ প্রশস্ত করেছে। যদিও সাধারণভাবে মনে করা হয় যে ফিল্মে দেখানো পরীক্ষাগুলো সত্যিই হয়েছিল, তবে ফিল্মটি অনেকের কাছে বিতর্কিত। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে ফিল্মটি অত্যধিক নাটকীয় এবং বৈজ্ঞানিক সঠিকতার অভাব রয়েছে। কিছু সমালোচক দাবি করেছেন যে ফিল্মটি সোভিয়েত প্রচারণার একটি হাতিয়ার ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত বিজ্ঞানের সাফল্য প্রদর্শন করা।
“Experiments in the Revival of Organisms” ফিল্মটি আজও বিজ্ঞানী এবং চলচ্চিত্র সমালোচকদের আগ্রহের বিষয় হয়ে রয়েছে। এই ফিল্মটি একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার দাবি করেছে, যা যদি সত্য হত, তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি বিপ্লব সৃষ্টি করতে পারত। তবে ফিল্মটির বিতর্কিত প্রকৃতি, সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কোল্ড ওয়ার এবং বৈজ্ঞানিক সঠিকতার অভাবের কারণে, এর দাবিগুলো সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু সন্দেহ থাকলেও, এই বিষয়টি বিজ্ঞানীদের জন্য আজও আগ্রহ উদ্দীপক। এই ফিল্মটি মানুষের মৃত্যু এবং জীবনের ধারণা সম্পর্কে নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। আসুন ভিডিওটি দেখে নেয়া যাক,
১৯৪৩ সালে, এই চলচ্চিত্রটি ১৯৪৩ সালে আমেরিকান-সোভিয়েত বন্ধুত্বের মহাসভায় এক হাজার মার্কিন বিজ্ঞানীর দর্শকদের দেখানো হয়েছিল। এই পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা কুকুরদের মাথা কেটে ফেলে এবং তারপর একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে তাদের মাথাটিকে কিছু সময়ের জন্য জীবিত রাখতে সক্ষম হয়েছিল। এই চলচ্চিত্রটি দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিল এবং বিজ্ঞানের নতুন সম্ভাবনার কথা ভাবতে শুরু করেছিল। এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয় ছিল একটি বিশেষ যন্ত্র, যার নাম অটোজেক্টর। এই যন্ত্রটি কুকুরের শরীরের পরিবর্তে তার মাথায় রক্ত সরবরাহ করত এবং এভাবে মাথাটিকে জীবিত রাখত। এই যন্ত্রটি পরে মানুষের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছিল এবং এটি আজকের দিনেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এই চলচ্চিত্রের সত্যতা নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। ব্রুখোনেঙ্কোর শিরচ্ছেদ পরীক্ষার বিষয়ে জর্জ বার্নার্ড শ’ মন্তব্য করা করেছিল, যিনি বলেছিলেন, “এমনকি আমি আমার নিজের মাথা কেটে ফেলার জন্য প্রলুব্ধ হয়েছি যাতে আমি অসুস্থতায় বিরক্ত না হয়ে, পোশাক-পরিচ্ছদ না পরে, না খেয়ে, মাস্টারপিস তৈরি করা ছাড়া আর কিছু না করে নাটকীয় শিল্প ও সাহিত্যের বই লিখে যেতে পারি।” [1]
- **তথ্যগত সঠিকতা**:
- ফিল্ম "Experiments in the Revival of Organisms" সম্পর্কে উল্লেখিত তথ্যগুলো ঐতিহাসিকভাবে সঠিক বলে মনে হয়, তবে কিছু দাবি যেমন "ফিল্মটি সোভিয়েত প্রচারণার হাতিয়ার ছিল" এবং "বৈজ্ঞানিক সঠিকতার অভাব"—এগুলো needs verification।
- জে.বি.এস. হালডেনের ভূমিকা এবং সের্গেই ব্রুখোনেঙ্কোর কাজের উল্লেখ সঠিক বলে মনে হয়, তবে এগুলোও আরও যাচাইয়ের প্রয়োজন হতে পারে।
- **যুক্তির গঠন**:
- লেখাটি যুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, তবে কিছু জায়গায় অতিরঞ্জিত বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে যা যুক্তির গুণমানকে প্রভাবিত করতে পারে।
- "ফিল্মটি সোভিয়েত প্রচারণার হাতিয়ার ছিল" দাবি একটি সম্ভাব্য "appeal to motive" fallacy হতে পারে।
- **উৎস ও প্রমাণ**:
- উল্লেখিত উৎস "Deutsche Gesellschaft für Kardiotechnik e.V." সঠিক বলে মনে হয়, তবে এটি শুধুমাত্র একটি উৎস এবং অন্যান্য উৎসের প্রয়োজন হতে পারে।
- ফিল্মের সত্যতা নিয়ে বিতর্কিত দাবিগুলো আরও নির্ভরযোগ্য উৎসের মাধ্যমে সমর্থিত হওয়া উচিত।
- **বৈজ্ঞানিক/সমসাময়িক মানদণ্ড**:
- ফিল্মে দেখানো পরীক্ষাগুলো আধুনিক বৈজ্ঞানিক মানদণ্ডে যাচাই করা প্রয়োজন। বর্তমান বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অনুযায়ী, এই ধরনের পরীক্ষাগুলোকে প্রমাণিত বা স্বীকৃত বলে বিবেচনা করা হয় না।
- **মূল শক্তি**:
- ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং ফিল্মের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ।
- বিষয়বস্তুর প্রতি পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখার ক্ষমতা।
- **মূল দুর্বলতা**:
- কিছু দাবি অতিরঞ্জিত এবং যাচাইয়ের প্রয়োজন।
- ফিল্মের বৈজ্ঞানিক সঠিকতা সম্পর্কে স্পষ্ট প্রমাণের অভাব।
- **সংশোধন ও সুপারিশ**:
- ফিল্মের বৈজ্ঞানিক দাবিগুলো যাচাই করার জন্য আরও নির্ভরযোগ্য উৎস এবং গবেষণা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
- অতিরঞ্জিত ভাষা পরিহার করে আরও নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা উচিত।
- **সারাংশ রায়**:
- তথ্যগত সঠিকতা: ৬/১০
- যুক্তির গুণমান: ৭/১০
- উৎসব্যবহার: ৫/১০
- সামগ্রিক স্কোর: ৬/১০
তথ্যসূত্রঃ
- “Sergej Sergejewitsch Brychonenko”। Deutsche Gesellschaft für Kardiotechnik e.V. (জার্মান ভাষায়)। ২০০৩। ২০০৭-০১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-১৪। ↩︎
