‘Subjective’ এবং ‘Objective’ শব্দগুলি প্রায়শই আমাদের বিভিন্ন আলোচনাতে আমরা ব্যবহার করি। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এগুলোর অর্থ বেশিরভাগ মুমিন ভাইয়েরা বুঝতে ব্যর্থ হন। বহুবার বহুভাবে বোঝাবার পরেও, আলোচনার শেষে তারা জিজ্ঞেস করেন ”সীতা কার বাপ!” তাই বিষয়গুলো আবারো ব্যাখ্যা করছি।
Subjective বা সাবজেক্টিভ শব্দটি সাবজেক্ট বা ব্যক্তি বা সত্ত্বার ওপর নির্ভরশীল। ব্যক্তিগত মতামত, বিশ্বাস, ইচ্ছা অনিচ্ছা বা অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে। আরো ভালোভাবে বললে, এটি হচ্ছে কারো মতামত।
এটি ব্যক্তিগত স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাত, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, সমাজ সংস্কার এবং দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। এর কোন সুনির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড নেই, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগতভাবে এটি এক এক জায়গাতে এক এক রকম।
উদাহরণস্বরূপ, অমুক ব্যক্তির কাছে একটি চলচ্চিত্রকে “অসাধারণ” মনে হয়েছে, সে চলচ্চিত্রটি উপভোগ করেছে। কিন্তু অন্য আরেকজনার কাছে সেই একই চলচ্চিত্রটি “ভয়াবহ কুরুচিপূর্ণ” মনে হয়েছে। বা ধরুন, অমুক কাজটি অমুকের কাছে ভাল লেগেছে, কিন্তু তমুক ঐ একই কাজকে অন্যায় বলে মনে করেছে।
বা ধরুন, অমুক জাতিগোষ্ঠী পশু বলি দেয়াকে ন্যায়সঙ্গত কাজ মনে করে, কিন্তু অন্য আরেকটি জাতিগোষ্ঠী সেই একই কাজকে অন্যায় কাজ বলে মনে করে। এদের মধ্যে কেউই তাদের কাজের পক্ষে কোন যুক্তিতথ্য প্রমাণ প্রদর্শন না করলে, কাজগুলো তাদের সাবজেক্টিভ অপিনিয়ন বা মতামত হিসেবে বুঝতে হবে। আমাদের নেতা বলেছে তাই এটি ন্যায়, আমাদের ধর্মগুরু বলেছে তাই এটি অন্যায়, এগুলো সবকিছুই সাবজেক্টিভ অপিনিয়ন। এইসব নিয়ম কানুন ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে একরকম হবে, হিন্দু ধর্মের ক্ষেত্রে হতে পারে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু। অমুক গ্রন্থে আছে বা তমুক ঈশ্বর এটি বলেছে, এগুলো কোনটিই যুক্তি তথ্য প্রমাণ নয়, নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্রভাবে যাচাইযোগ্য নয়, ব্যক্তিবিশেষের বিশ্বাস মাত্র। তাই এগুলো সবই সাবজেক্টিভ অপিনিয়ন বা মতামত।
এবারে আসুন অবজেক্টিভ কাকে বলে জেনে নিই। Objective হচ্ছে, যুক্তি তথ্য এবং প্রমাণের উপর ভিত্তি করে যেই তথ্যটিকে স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়। এটি ব্যক্তিগত মতামত বা বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ, “ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি একশ‘ আশি ডিগ্রী” বা “পৃথিবী নিখুঁতভাবে গোলাকার না হলেও প্রায় গোলাকার” এই বিবৃতিগুলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষ যুক্তি তথ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে যাচাই করা সম্ভব। বৈজ্ঞানিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এই তথ্যগুলো নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায় বলে এগুলো সত্য তথ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। পৃথিবীর সকল মানুষ এগুলো মানতে অস্বীকার করলেও, এগুলো যুক্তি তথ্য প্রমাণের জোরেই সত্য তথ্য বলে গণ্য হবে। কারো মতামত বা ইচ্ছা অনিচ্ছা বা নির্দেশনা বা বিশ্বাসের ওপর এই তথ্যের সত্যতা নির্ধারিত হবে না। শুধুমাত্র যুক্তি তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই এগুলো অবজেক্টিভলি সত্য। এগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করা সম্ভব শুধুমাত্র এই তথ্যগুলোকে অবজেক্টিভলি মিথ্যা প্রমাণের মাধ্যমে, বা এর চাইতে ভাল কোন অবজেক্টিভ প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে।
এখানে উল্লেখ্য, যুক্তি তথ্য প্রমাণ কখনো সাবজেক্টিভ হতে পারে না৷ সাবজেক্টিভ হলে সেগুলো আর যুক্তি তথ্য প্রমাণ থাকে না। মতামত বা অপিনিয়ন হয়ে যায়। যুক্তি তথ্য প্রমাণ সেগুলো তখনই হবে, যখন সেটি নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র ভাবে যাচাই করা যাবে। আসুন আরো ভালভাবে এখান থেকে জেনে নিই,
- **তথ্যগত সঠিকতা**:
- লেখাটি সাবজেক্টিভ এবং অবজেক্টিভ ধারণার মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করেছে। তবে, এটি কোনো নির্দিষ্ট উৎস বা তথ্যসূত্র উল্লেখ করেনি যা এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
- ইউটিউব লিংকটি একটি ভিডিওর দিকে নির্দেশ করে, তবে ভিডিওটির বিষয়বস্তু যাচাই করা সম্ভব নয়। তাই এটি "needs verification" হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
- **যুক্তির গঠন**:
- লেখাটি যুক্তিসঙ্গতভাবে সাবজেক্টিভ এবং অবজেক্টিভ ধারণার পার্থক্য ব্যাখ্যা করেছে।
- কোনো বড় ধরনের লজিক্যাল ফ্যালাসি নেই, তবে কিছু উদাহরণ আরও স্পষ্ট হতে পারত।
- **উৎস ও প্রমাণ**:
- লেখায় উল্লেখিত ইউটিউব লিংকটি একটি উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে এর বিষয়বস্তু যাচাই করা যায়নি।
- অন্যান্য কোনো উৎস বা তথ্যসূত্র নেই যা লেখার দাবিগুলোকে সমর্থন করে।
- **বৈজ্ঞানিক/সমসাময়িক মানদণ্ড**:
- লেখাটি বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিক মানদণ্ডে সাধারণত গ্রহণযোগ্য, তবে আরও প্রমাণ বা উৎস উল্লেখ করলে এটি আরও শক্তিশালী হতো।
- **মূল শক্তি**:
- সাবজেক্টিভ এবং অবজেক্টিভ ধারণার মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
- উদাহরণ ব্যবহার করে বিষয়টি সহজবোধ্য করা হয়েছে।
- **মূল দুর্বলতা**:
- তথ্যসূত্রের অভাব রয়েছে, যা লেখার বিশ্বাসযোগ্যতা কমিয়ে দেয়।
- ইউটিউব লিংকটি যাচাই করা সম্ভব নয়, তাই এটি নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
- **সংশোধন ও সুপারিশ**:
- আরও নির্ভরযোগ্য উৎস এবং তথ্যসূত্র উল্লেখ করা উচিত।
- উদাহরণগুলো আরও বিস্তারিত এবং প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
- **সারাংশ রায়**:
- তথ্যগত সঠিকতা: ৬/১০
- যুক্তির গুণমান: ৭/১০
- উৎসব্যবহার: ৫/১০
- সামগ্রিক স্কোর: ৬/১০
