জান্নাতে বেলালের পায়ের আওয়াজ

আসুন একটি অদ্ভুত হাদিস পড়ি। আমরা সকলেই যারা ইসলামের ইমান আকীদা সম্পর্কে অবগত, তারা জানি যে, মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষার জন্য। মানুষের মৃত্যুর পরে তাদের কবরে আজাব হবে, এরপরে কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর উপস্থিতিতে হবে বিচার। সেই বিচারে যারা আল্লাহর অনুগত থাকবে, তারা জান্নাতে যাবে, আর যারা আল্লাহর অনুগত হবে না, তারা জাহান্নামে যাবে। সেই বিচার হবে কেয়ামতে, মহাবিশ্ব ধ্বংসের পরে। কিন্তু এই হাদিসটিতে দেখা যাচ্ছে, জীবিত একজন মানুষের পায়ের আওয়াজ জান্নাতে পাওয়া যাচ্ছে। হাদিসটি অদ্ভুত এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবী মুহাম্মদ বলেছেন, তিনি নাকি তার সম্মুখে জান্নাতে হযরত বেলালের জুতার আওয়াজ শুনেছেন [1]

মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত
পরিচ্ছেদঃ ৩৯. প্রথম অনুচ্ছেদ – নফল সালাত
সকল প্রকার নফল সালাত, যেগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত, যথাক্রমে সালাতুল তাহ্ইয়্যাতুল উযূ, সালাতুন ইস্তিখারাহ্, তওবা্, সালাতুল হাজাত এবং সালাতুত্ তাসবীহ।
التَّطَوُّعِ শব্দটি الطوع، والطاعة শব্দ হতে গৃহীত অর্থ মান্য করা, বাস্তবায়ন করা, মেনে নেয়া ইত্যাদি এবং التَّطَوُّعِ শব্দটি ফরয ও ওয়াজিব ব্যতীত সকল নফলের উপর মুত্বলাক (তালাক)্ব (সকল নফলের ক্ষেত্রে এ শব্দটি প্রযোজ্য) আর যে বা যারা ফরয কিংবা ওয়াজিবের উপর অতিরিক্ত ’আমলুস্ সালিহ বা সৎকর্ম সম্পাদন করে তাকে (مُتَطَوِّعِ) বলা হয়।
১৩২২-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সময়ে ইরশাদ করলেনঃ হে বিলাল! ইসলাম কবূল করার পর তুমি এমনকি ’আমল করেছ যার থেকে অনেক সাওয়াব হাসিলের আশা করতে পার। কেননা, আমি আমার সম্মুখে জান্নাতে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। (এ কথা শুনে) বিলাল বললেন, আমি তো অনেক আশা করার মতো কোন ’আমল করিনি। তবে রাত্রে বা দিনে যখনই আমি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করেছি, আমার সাধ্যমতো সে উযূ দিয়ে আমি (তাহ্ইয়্যাতুল উযূর) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছি। (বুখারী, মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ১১৪৯, মুসলিম ২৪৫৮, ইরওয়া ৪৬৪, সহীহ আত্ তারগীব ২২৬, আহমাদ ৮৪০৩, ইবনু খুযায়মাহ্ ১২০৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

এই হাদিসটি পড়ার পরে কয়েকটি প্রশ্ন জাগেঃ

  • মুহাম্মদ তো এখনো জান্নাতবাসী হননি। তিনি ঠিক কবে জান্নাতে গেলেন? মিরাজের রাত ছাড়া আর কোন ঘটনা তো ঘটেছে বলে জানি না।
  • হযরত বিলালের তো তখনো মৃত্যুই হয়নি, কেয়ামতও ঘটেনি। তাহলে বিলালের পায়ের আওয়াজ জান্নাতে কীভাবে পাওয়া গেল?
  • এমন কি হতে পারে যে, নবী মুহাম্মদ পৃথিবীর কোন ঘরেই জান্নাতের সুখ লাভ করছিলেন, সেই সময়ে দরজার কাছে বিলাল পাহারারত ছিল। জান্নাতের আনন্দময় অভিজ্ঞতা বা অন্তিম সুখ লাভের সময় নবী আসলেই বিলালের পায়ের আওয়াজ শুনেছিলেন?

আসুন এই সম্পর্কে একটি ওয়াজ শুনি,



তথ্যসূত্রঃ
  1. মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিসঃ ১৩২২ ↩︎