রাস্তায় নারী দেখে নবীর উত্তেজনা

ইসলামের নবী মুহাম্মদের জীবনের বিভিন্ন দিক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলি এমন আচরণের ইঙ্গিত দেয় যা নৈতিকতা ও শালীনতার দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ। সহীহ মুসলিম হাদিসে বর্ণিত একটি ঘটনা অনুযায়ী, রাস্তা-ঘাটে বা বাইরে কোনো নারীকে দেখলে মুহাম্মদের প্রবল যৌন কামনা উদ্রেক হতো, যা তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না। তাৎক্ষণিকভাবে দৌড়ে গিয়ে স্ত্রী বা দাসীর সাথে মিলিত হয়ে প্রশমিত করতে হতো। ঘটনাটি কল্পনা করুন, একজন মানুষ রাস্তায় একজন সুন্দরী নারীকে দেখে উত্তেজিত হলেন, তড়িঘড়ি করে বাসায় এসে স্ত্রীকে ডেকে দরজা বন্ধ করলেন। এই বিষয়টি একজন সভ্য এবং আত্মসংযমশীল মানুষের জন্য কতটা শোভনীয়? এমন আচরণ একজন নৈতিক ও ধার্মিক নেতার জন্য কতটা সঙ্গতিপূর্ণ? এখানে প্রশ্ন হলো, একজন নবী, যিনি মানুষের আত্মসংযম ও শালীনতার প্রতীক হিসেবে মুসলিমদের কাছে বিবেচিত, তার এই আচরণ কি আদৌ উপযুক্ত এবং অনুকরণীয় হতে পারে? নারীদেরকে “শয়তানের রূপে” দেখা এবং তাদেরকে অবজেক্টিফিকেশন করা বা যৌন আকর্ষণের বস্তু হিসেবে বিবেচনা করা কি একজন সভ্য মানুষের মানসিকতা হতে পারে?

এই ধরনের হাদিসগুলোতে নারীর প্রতি মুহাম্মদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়, যা অত্যন্ত অবমাননাকর ও অশালীন। নারীদেরকে “শয়তানের বেশে” সামনে আসা বা যাওয়া বলে উল্লেখ করা, এবং কেবলমাত্র যৌন আকাঙ্ক্ষা মেটানোর বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা নারী-পুরুষের সম্মানজনক সম্পর্কের ধারণার পরিপন্থী। এমনকি হাদিসে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ অন্যদেরকেও এই উপদেশ দিয়েছেন যে, তারা যদি কোনো নারীকে দেখে কামাতুর হয়ে যায়, তবে তারা যেন সাথে সাথে বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী অথবা যৌনদাসীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। এর মাধ্যমে নারীর প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং নিজের যৌন ইচ্ছা পূরণের অশালীন আচরণ প্রকাশিত হয়। কারণ এই উত্তেজনাটি সে তার স্ত্রী অথবা প্রেমিকাকে দেখে বোধ করেনি। অন্য আরেকজনকে দেখে জেগে ওঠা উত্তেজনা প্রশমন করছে স্ত্রী বা যৌনদাসীর ওপর। কল্পনা করুন তো, আপনার স্ত্রী বা প্রেমিকা আপনার সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত, একজন আরেকজনকে চুম্বন করছেন, কিন্তু সে মনে মনে অন্য এক পুরুষকে কল্পনা করছে, অন্য কোন পুরুষকে কল্পনায় ভেবে শীৎকার করছে, এটি আপনার জন্য কতটা সম্মানজনক? এটি আপনার জন্য যেমন অপমানজনক, একজন নারীর জন্যেও একইরকম অপমানজনক।

এই আচরণে নারীর সম্মান ও মর্যাদা কোথায়? একজন মানুষ কাউকে দেখে উত্তেজিত হতেই পারেন, কিন্তু সভ্য মানুষ সেটি নিয়ন্ত্রণ করতেও শিখে যান। কিন্তু একজন নৈতিক সভ্য মানুষের কি এভাবে রাস্তায় যে কোনো নারীকে দেখে উত্তেজিত হয়ে এমন পরিস্থিতিতে চলে যেতে পারেন যে, তার আর এই মূহুর্তে সঙ্গম না করলেই হচ্ছে না? এমন আচরণ কি তার অনুসারীদের কাছে কোনো রকম নৈতিক আদর্শ হতে পারে? ইসলামি বিশ্বাসমতে, নবীর চরিত্রই হলো সর্বোচ্চ আদর্শ। তাহলে কেন নবীর এই ধরনের আচরণকে একজন বিশ্বাসী অনুসরণ করবেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যায়, মুহাম্মদের এই ধরনের যৌন আচরণে নারীকে কেবলমাত্র একটি বস্তু হিসেবে দেখা হয়, যা আদর্শিক এবং নৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য [1] [2]

সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩২৯৮-(৯/১৪০৩) আমর ইবনু আলী (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলাকে দেখলেনতখন তিনি তার স্ত্রী যায়নাব এর নিকট আসলেন। তিনি তখন তার একটি চামড়া পাকা করায় ব্যস্ত ছিলেন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের প্রয়োজন পূরণ করলেন। অতঃপর বের হয়ে সাহাবীগণের নিকট এসে তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোক সামনে আসে শয়ত্বানের বেশে এবং ফিরে যায় শায়ত্বানের বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোন স্ত্রীলোক দেখতে পেলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে। কারণ তা তার মনের ভেতর যা রয়েছে তা দূর করে দেয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৩২৭৩, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পরিচ্ছদঃ ২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩৩০০-(১০/…) সালামাহ্ ইবনু শাবীব (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কারো যদি কোন স্ত্রীলোক দেখে মনে কিছু উদয় হয় তখন সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে এবং তার সাথে মিলিত করে। এতে তার মনে যা আছে তা দূর করে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩২৭৫, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)


তথ্যসূত্রঃ
  1. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিসঃ ৩২৯৮ ↩︎
  2. সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিসঃ ৩৩০০ ↩︎