ইসলাম অনুসারে মেয়েদেরও বীর্য থাকে!

যৌনকর্মের সময় ছেলেদের লিঙ্গ থেকে বীর্য নির্গত হয়, সেটি আমরা সকলেই জানি। বীর্য একপ্রকার জৈবিক তরল যা যৌনসঙ্গমের শেষ পর্যায়ে চরম সুখানুভূতি সৃষ্টির সঙ্গে পুরুষাঙ্গ হতে নি:সৃত হয়। এটি হচ্ছে যার মধ্যে শুক্রাণু থাকে, যেই শুক্রাণু ডিম্বাশয়ে প্রবেশ করলে সন্তান জন্ম হয়। এটি এক প্রকার ঘনীভূত, ঈষৎ ক্ষারীয়, আঠালো জেলির ন্যায় জৈব তরল যা সাধারণত স্পার্মাটোজোয়া বা সহজ ভাষায় স্পার্ম ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। এটি সাধারণত কোন জীব প্রজাতির পুরুষের অন্ডকোষ কিংবা উভলিঙ্গ প্রাণীর অন্ডকোষ থেকে উৎপন্ন হয় এবং ঐ প্রজাতির স্ত্রী লিঙ্গের প্রাণীর জরাযুতে সৃষ্ট হওয়া ডিম্বাণু নিষিক্ত করার ক্ষমতা রাখে।

নারীর যোনিমুখের দু’পাশে বিশেষ গ্রন্থি আছে । কামোত্তেজনার সময় এই গ্রন্থি থেকে এক রকম তরল রস নির্গত হয়, যা কিনা সারা যোনি-মুখকে ভিজিয়ে পিচ্ছিল করে দেয়, এর ফলে পুরুষের লিঙ্গ তার গভীরে প্রবিষ্ট করতে সুবিধে হয়। বাইরে থেকে এই গ্রন্থি দৃশ্যমান নয়, চামড়ার আড়ালে সেটি ঢাকা থাকে। কিন্তু যোনিমুখে রস নিঃসরণ হলে সেই রস সরাসরি চোখে দেখা যায়। সব সময় এই রস নিঃসৃত হয় না। কেবল যখন প্রবল কামোত্তেজনা সৃষ্টি হয়- তখনি বার্থোলিন গ্রন্থি এই রসসৃষ্টি করে এবং নারীর যোনিকে পিচ্ছিল করে পুরুষের লিঙ্গ প্রবেশের উপযোগী করে। এই রস দেখে প্রাচীনকালে মানুষ ভাবতো, নারীরও বীর্য রয়েছে। আসলে সেইসব ধার ভুল। সেই রসে কোন শুত্রূবীজানু থাকে না। আবার নারীদেহের এই কামরসের সঙ্গে ডিম্বাণুর সরাসরি কোন সস্পর্ক নেই, এই কামরস শুধুমাত্র পুরুষাঙ্গকে প্রবেশের পথ তৈরি করে। অনেকেই বলে থাকেন, রতিক্রিয়া শেষে পুরুষের মতো কি নারীর যোনি থেকেও বীর্যপাত ঘটে ? এক কথায় এর জবাব হল ‘না।’ মেয়েদের কোনো বীর্যপাত হয় না। তাদের বীর্য হিসেবে কোনকিছুকে সংজ্ঞায়িত যদি করতেই হয় তাহলে সেটি হবে তার ডিম্বাণু।

নবী মুহাম্মদের এই সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। নিশ্চয়ই তিনি যৌনকর্মের সময় মেয়েদের কামরস দেখতেন, সেগুলো দেখে তিনি ভাবতেন মেয়েদেরও বীর্য নির্গত হয়। বস্তুতপক্ষে সেগুলো বীর্য নয়, মেয়েদের কামরস [1] [2] [3] [4]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৩/ আল-ইলম (ধর্মীয় জ্ঞান)
পরিচ্ছেদঃ ৩/৫০. ইল্‌ম শিক্ষা করতে লজ্জাবোধ করা।
وَقَالَ مُجَاهِدٌ لاَ يَتَعَلَّمُ الْعِلْمَ مُسْتَحْيٍ وَلاَ مُسْتَكْبِرٌ وَقَالَتْ عَائِشَةُ نِعْمَ النِّسَاءُ نِسَاءُ الأَنْصَارِ لَمْ يَمْنَعْهُنَّ الْحَيَاءُ أَنْ يَتَفَقَّهْنَ فِي الدِّينِ.
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ’লাজুক এবং অহঙ্কারী ব্যক্তি জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। ’আয়িশাহ (রাযি.) বলেন, ’আনসারী মহিলারাই উত্তম। লজ্জা তাদেরকে ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারেনি।
১৩০. উম্মু সালামাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উম্মু সুলায়ম (রাযি.) এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ হক কথা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ’হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখতে পাবে।’ তখন উম্মু সালামাহ (লজ্জায়) তার মুখ ঢেকে নিয়ে বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! মহিলাদেরও স্বপ্নদোষ হয় কি?’ তিনি বললেন, ’হ্যাঁ, তোমার ডান হাতে মাটি পড়ুক! (তা না হলে) তাদের সন্তান তাদের আকৃতি পায় কীভাবে? (২৮২, ৩৩২৮, ৬০৯১, ৬১২১; মুসলিম ৩/৭, হাঃ ৩১৩, আহমাদ ২৬৬৭৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩/ ইলম বা জ্ঞান
পরিচ্ছেদঃ ৯২। ‘ইলম শিক্ষা করতে লজ্জাবোধ করা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ১৩২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৩০
وَقَالَ مُجَاهِدٌ لاَ يَتَعَلَّمُ الْعِلْمَ مُسْتَحْيٍ وَلاَ مُسْتَكْبِرٌ. وَقَالَتْ عَائِشَةُ نِعْمَ النِّسَاءُ نِسَاءُ الأَنْصَارِ لَمْ يَمْنَعْهُنَّ الْحَيَاءُ أَنْ يَتَفَقَّهْنَ فِي الدِّينِ
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ’লাজুক এবং অহঙ্কারী ব্যক্তি জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। ’আয়িশা (রাঃ) বলেন, ’আনসারী মহিলারাই উত্তম। লজ্জা তাদেরকে ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারে নি।
১৩২। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে উম্মে সুলায়ম (রাঃ) এসে বললেনঃ ইয়া রাসুল্লাহ! আল্লাহ হক কথা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ’হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখতে পাবে।’ তখন উম্মে সালমা (লজ্জায়) তাঁর মুখ ঢেকে নিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষ হয় কি?’ তিনি বললেন, ’হ্যাঁ, তোমার ডান হাতে মাটি পড়ুক!* (তা না হলে) তাঁর সন্তান তাঁর আকৃতি পায় কিরূপে?
* এটি কোন বদ দুয়া বরং বিস্ময় প্রকেশের জন্য আরবীতে ব্যবহৃত হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫/ গোসল
পরিচ্ছেদঃ ৫/২২. মহিলাদের ইহ্তিলাম (স্বপ্নদোষ) হলে।
২৮২। উম্মুল মু‘মিনীন উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আবূ তালহা (রাঃ) এর স্ত্রী উম্মু সুলায়ম (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খিদমাতে এসে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ্ তা‘আলা হকের ব্যাপারে লজ্জা করেন না। স্ত্রীলোকের ইহ্‌তিলাম (স্বপ্নদোষ) হলে কি ফরয গোসল করবে? আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হাঁ, যদি তারা বীর্য দেখে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩/ হায়েয
পরিচ্ছেদঃ ৭. মহিলার মনী (বীর্য) বের হলে তার উপর গোসল করা ওয়াজিব
৬০৩। আব্বাস ইবনুল ওয়ালদী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সেই মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন যে ঘূমে পুরুষ যা দেখে তাই দেখতে পায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মেয়ে লোক যখন ঐরুপ দেখবে তখন সে গোসল করবে। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, এ কথায় আমি লজ্জাবোধ করলাম। তিনি বললেন, এ রকমও কি হয়? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কোত্থেকে হয়? পুরুষের বীর্য গাড় সাদা আর মেয়েলোকের বীর্য পাতলা, হলুদ। উভয়ের মধ্য থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায় অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)


Independent AI Review

- **তথ্যগত সঠিকতা:**
- লেখাটিতে বীর্য এবং কামরস সম্পর্কে যে তথ্য প্রদান করা হয়েছে তা সাধারণত সঠিক। তবে, "মেয়েদের কোনো বীর্যপাত হয় না" এই দাবিটি কিছুটা বিভ্রান্তিকর হতে পারে কারণ নারীদেরও যৌন উত্তেজনার সময় তরল নিঃসরণ হয়, যা কিছু ক্ষেত্রে "নারী বীর্যপাত" হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
- নবী মুহাম্মদের ধারণা সম্পর্কে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা হাদিসের উদ্ধৃতির উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। তবে, এই মন্তব্যের নিরপেক্ষতা এবং সঠিকতা যাচাই করা প্রয়োজন।

- **যুক্তির গঠন:**
- লেখাটির যুক্তির গঠন মোটামুটি সুসংহত। তবে, নবী মুহাম্মদের ধারণা সম্পর্কে মন্তব্য করার সময় কিছুটা অনুমানমূলক মনে হয়েছে।
- লেখাটিতে কোনো বড় ধরনের যুক্তিগত ভ্রান্তি নেই, তবে কিছু মন্তব্যের ক্ষেত্রে আরও নিরপেক্ষতা প্রয়োজন।

- **উৎস ও প্রমাণ:**
- লেখাটিতে হাদিসের উল্লেখ করা হয়েছে, যা দাবিগুলোর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে, এই উৎসগুলো কতটা নির্ভরযোগ্য এবং প্রাসঙ্গিক তা যাচাই করা প্রয়োজন।

- **বৈজ্ঞানিক/সমসাময়িক মানদণ্ড:**
- লেখাটি যৌন স্বাস্থ্য এবং প্রজনন সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, কিছু মন্তব্যের ক্ষেত্রে আরও নিরপেক্ষতা এবং বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

- **মূল শক্তি:**
- যৌন স্বাস্থ্য এবং প্রজনন সংক্রান্ত তথ্যগুলি সাধারণত সঠিক এবং সহজবোধ্য।
- হাদিসের উল্লেখ লেখাটিকে প্রমাণসমর্থিত করেছে।

- **মূল দুর্বলতা:**
- নবী মুহাম্মদের ধারণা সম্পর্কে মন্তব্য কিছুটা অনুমানমূলক এবং নিরপেক্ষতার অভাব রয়েছে।
- কিছু মন্তব্যের ক্ষেত্রে আরও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

- **সংশোধন ও সুপারিশ:**
- নবী মুহাম্মদের ধারণা সম্পর্কে মন্তব্য করার সময় আরও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত।
- নারীদের যৌন উত্তেজনা এবং তরল নিঃসরণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আরও স্পষ্টভাবে প্রদান করা যেতে পারে।

- **সারাংশ রায়:**
- তথ্যগত সঠিকতা: ৭/১০
- যুক্তির গুণমান: ৬/১০
- উৎসব্যবহার: ৭/১০
- সামগ্রিক স্কোর: ৭/১০

এই রিভিউটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি; এটি কোনো মানব সম্পাদকীয় মতামত নয়।

তথ্যসূত্রঃ
  1. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিসঃ ১৩০ ↩︎
  2. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ১৩২ ↩︎
  3. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিসঃ ২৮২ ↩︎
  4. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬০৩ ↩︎