আমরা জানি যে, প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ পাখীদের ডানা দেখে কল্পনায় ডানাওয়ালা ঘোড়া, ডানাওয়ালা হরিণ, ডানাওয়ালা মানুষ কল্পনা করে নানা রূপকথার জন্ম দিয়েছে। এমনকি, অনেক সময় তারা সেইসব রূপকথার গল্পে এরকম কাহিনীও তৈরি করেছে যে, ডানাওয়ালা মানুষ উড়ে উড়ে চাঁদে চলে গেছে, বা অন্য কোন গ্রহে চলে গেছে। অথচ বিজ্ঞান সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ মাত্রই জানেন যে, ডানা প্রয়োজন হয় বায়ুমণ্ডলের জন্য। বায়ুমণ্ডলের উপরে ডানার কোন প্রয়োজন নেই। একইসাথে, শত শত ডানা থাকাটিও কোন কাজের কথা নয়। ব্যাপারটি মোটেও এরকম নয় যে, বেশি ডানা থাকলে বেশি দ্রুত চলাফেরা করা যাবে! ইসলামি মিথলজিতে এরকম কিছু হাস্যকর রূপকথাই আসলে বলা হয়েছে। আসুন দেখা যাক, ফেরেশতাদের ডানা সম্পর্কে ইসলামে কি বলা আছে [1] [2] [3] [4] –
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৫/ কুরআন মাজীদের তাফসীর
পরিচ্ছেদঃ ৬৫/৫৩/২. আল্লাহর বাণীঃ অবশেষে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের দূরত্ব রইল অথবা আরও কম। (সূরাহ আন্-নাজম ৫৩/৯)
৪৮৫৬. ’আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। فَأَوْحٰىٓ إِلٰى عَبْدِهٰمَآ أَوْحٰى আয়াত দু’টোর ব্যাখ্যা সম্পর্কে ইবনু মাস’উদ (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীল (আঃ)-কে দেখেছেন। তাঁর ছয়’শ ডানা ছিল। [৩২৩২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাঃ)
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২১৯০. যে সব মুসলিম উহুদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন হামযা ইব্ন আবদুল মুত্তালিব (হুযায়ফার পিতা), ইয়ামান, আনাস ইব্ন নাসর এবং মুসআব ইব্ন উমায়র (রা)।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৩৭৮০, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪০৭৯ – ৪০৮০
৩৭৮০। কুতায়বা ইব্ন সাঈদ (রহঃ) … জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদ যুদ্ধের শহীদগণের দু’জনকে একই কাপড়ে (একই কবরে) দাফন করেছিলেন। কাফনে জড়ানোর পর তিনি জিজ্ঞেস করতেন, এদের মধ্যে কে কুরআন সম্বন্ধে অধিক জ্ঞাত? যখন কোনো একজনের প্রতি ইঙ্গিত করা হত তখন তিনি তাকেই কবরে আগে নামাতেন এবং বলতেন, কিয়ামতের দিন আমি তাদের জন্য সাক্ষ্য হব। সেদিন তিনি তাদেরকে তাদের রক্তসহ দাফন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তাদের জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) ও আদায় করা হয়নি এবং তাদেরকে গোসলও দেওয়া হয়নি।
(অন্য এক সনদে) আবূল ওয়ালী (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, আমার পিতা শাহাদাত বরণ করার পর (তাঁর শোকে) আমি কাঁদতে লাগলাম এবং বারবার তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে দিচ্ছিলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ আমাকে এ থেকে বারণ করেছিলেন। তবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এ ব্যাপারে) আমাকে নিষেধ করেননি। অধিকন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আবদুল্লাহর ফুফুকে বলেছেন) তোমরা এর জন্য কাঁদছ! অথচ জানাযা না উঠানো পর্যন্ত ফেরেশতারা নিজেদের ডানা দিয়ে তাঁর উপর ছায়া বিস্তার করছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান
পরিচ্ছেদঃ ফিরিশতার প্রতি ঈমান
(৫৭) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীলকে দেখেছেন, তাঁর ছয় শত ডানা রয়েছে।
(বুখারী ৪৮৫৭, মুসলিম ৪৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাঃ)
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক
পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ – জ্যোতিষীর গণনা
৪৬০০-[৯] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আকাশমণ্ডলীতে যখন কোন ফায়সালা করেন, তখন সে নির্দেশে মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাদের পাখাসমূহ নাড়াতে থাকেন। আল্লাহ তা’আলার সে নির্দেশটির আওয়াজ সে শিকলের শব্দের মতো যা কোন একটি সমতল পাথরের উপরে টেনে নেয়া হলে শোনা যায়। অতঃপর যখন মালায়িকাহ্ অন্তর হতে সে ভীতি দূর হয়ে যায়, তখন সাধারণ মালাক (ফেরেশতা) আল্লাহর নিকটতম মালাক-কে জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের রব্ কি নির্দেশ দিয়েছেন? তাঁরা বলেন, আমাদের প্রভু যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ সঠিকই বলেছেন। (এবং সে নির্দেশটি কি তা জানিয়ে দেন,) এরপর বলেন, আল্লাহ তা’আলা হলেন সুমহান ও মর্যাদাসম্পন্ন।
আল্লাহর নবী আরো বলেছেনঃ আল্লাহর ফায়সালাকৃত বিধান সম্পর্কে ফেরেশতাদের মধ্যে যেসব আলোচনা হয়, জীন-শায়ত্বনেরা চোরা পথে একজন আরেকজনের উপরে দাঁড়িয়ে শোনার চেষ্টা করে। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান নিজের হাতের অঙ্গুলিগুলো ফাঁক করে শয়তানরা কিভাবে একজন আরেকজন হতে কিছুটা ফাঁক করে কিভাবে একজন আরেকজন হতে কাছাকাছি দাঁড়ায় তা অনুশীলন করে দেখিয়েছেন। অতঃপর যে শয়তান প্রথমে নিকট হতে শুনতে পায় সে তা তার নিচের শয়তানকে বলে দেয় এবং সে তার নিচের জনকে, এভাবে কথাটি জাদুকর ও গণকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়।
অনেক সময় এমন হয় যে, ঐ কথাটি পৌঁছার পূর্বেই আগুনের ফুলকি তাদের ওপর নিক্ষেপ করা হয় (ফলে আর তা গণকদের পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না)। আবার কখনো তারকা নিক্ষেপ হওয়ার পূর্বেই তা তাদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। অতঃপর তারা ঊর্ধ্বজগতে শুনা সে (সত্য) কথাটির সাথে (নিজেদের মনগড়া) শত শত মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে মানুষের কাছে বলে। আর যখন তাকে বলা হয় যে, অমুক দিন তুমি আমাদেরকে এই এই কথা বলেছিলে, (তা তো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।) তখন ঐ একটি কথা দ্বারা তার সত্যতা প্রমাণ করা হয়, যা ঊর্ধ্বজগৎ হতে শ্রুত হয়েছিল। (বুখারী)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৪৭০১, ইবনু মাজাহ ১৯৪, আল জামি‘উস্ সগীর ৭৩৬, সহীহুল জামি‘ ৭৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৬, তিরমিযী ৩২২৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
তথ্যসূত্র
- সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিসঃ ৪৮৫৬ [↑]
- সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৩৭৮০ [↑]
- হাদিস সম্ভার, হাদিসঃ ৫৭ [↑]
- মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিসঃ ৪৬০০ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"