একজন কবি হলেন মানুষের মনের কারিগর, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুভূতির চিত্রশিল্পী। তিনি শব্দের জাদুতে সাজিয়ে তোলেন জীবনের নানা রঙ। কবিতা হলো মনের আয়না, যেখানে প্রতিফলিত হয় মানুষের সুখ-দুঃখ, আশা-নিরাশা, ভালোবাসা-বিদ্বেষ। কবির কলমের আঁচড়ে জীবন পায় নতুন মাত্রা, নতুন অর্থ। মানুষ সর্বদা সৌন্দর্যের অন্বেষণ করে। কবিতা সেই সৌন্দর্যের একটি উৎস। প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের মনের সৌন্দর্য, ভালোবাসার সৌন্দর্য – সবকিছুই কবিতার বিষয়বস্তু। কবির কলমে প্রকৃতির সবুজ শ্যামলতা, ফুলের মিষ্টি সুবাস, চাঁদের রুপালি আলো, তারার ঝলমলানি – সবকিছুই নতুন রূপ পায়। মানুষের মনের জটিলতা, ভালোবাসার মধুরতা, বিচ্ছেদের বেদনা – সবকিছুই কবিতায় প্রকাশ পায়।
কবিতা শুধুমাত্র সৌন্দর্যের প্রকাশ নয়, এটি জীবনের একটি গভীর উপলব্ধি। কবি তার কবিতার মাধ্যমে জীবনের সত্যকে তুলে ধরে। তিনি মানুষকে চিন্তা করতে বাধ্য করে, তাদের মনের গভীরে প্রবেশ করে। কবিতা মানুষকে জীবনের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। কবিতা হলো একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যার মাধ্যমে মানুষের মনকে প্রভাবিত করা যায়। কবির কবিতা মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, তাদের মনে আশা জাগিয়ে তোলে। কবিতা মানুষকে সাহস দেয়, নতুন করে জীবন শুরু করতে উৎসাহিত করে।
কবিতা হলো মানুষের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিটি জাতি, প্রতিটি সমাজের কবিতা তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বহন করে। কবিতার মাধ্যমে একটি জাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য প্রকাশ পায়। সার্বিকভাবে বলতে গেলে, কবি ও কবিতা মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কবির কলমের আঁচড়ে জীবন পায় নতুন মাত্রা, নতুন অর্থ। কবিতা মানুষকে জীবনের সত্যকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে, তাদের মনকে প্রভাবিত করে এবং তাদের জীবনে নতুন আশা জাগিয়ে তোলে। কিন্তু এই কবিতা এবং কবিদের সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন? কবি এবং কবিতা সম্পর্কে ইসলামে ভাল মন্দ দুই ধরণের কথাই বলা আছে। তবে একজন কবির কবিতা লেখায় যেই নিরঙ্কুশ থাকা জরুরি, ইসলামে তার কোন সুযোগ নেই। কোন নারীর প্রতি প্রেম বশত কবিতা লেখা কিংবা নরনারীর শরীর নিয়ে আবেগপ্রবণ কবিতা লেখার ক্ষেত্রে ইসলামে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া হাদিসে বর্ণিত আছে, [1] [2]
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪৩/ কবিতা
পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৫৬৯৭। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তির পেট পুঁজে ভর্তি হয়ে যাওয়া যা তার পেটকে পটিয়ে নষ্ট করে দেয়, তা কবিতায় ভর্তি হওয়ার চাইতে উত্তম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৪৩/ কবিতা
পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৫৬৯৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ সাকাফী (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ‘আরজ’ এলাকায় সফর করছিলাম। তখন এক কবি কবিতা আবৃতি করতে করতে আসতে লাগল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শয়তানটাকে ধরে ফেল কিংবা (বর্ণনা সন্দেহ, তিনি বললেন) শয়তানটাকে রুখে দাও। কোন লোকের পেট পুঁজে ভর্তি হয়ে যাওয়া কবিতায় ভর্তি হওয়া থেকে উত্তম।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
তথ্যসূত্র
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"