অন্যের নাম বিকৃতি করা
আমর ইবনে হিশাম বা আবু আল-হাকাম (অর্থ জ্ঞানীর পিতা) ছিলেন মক্কার একজন বহুঈশ্বরবাদী পৌত্তলিক বা মূর্তিপূজারী সম্ভ্রান্ত কুরাইশ নেতা। ইসলামের নবী মুহাম্মদ ও মক্কার মুসলমানদের সাথে তার তীব্র সংঘাত হয়। সেই কারণে নবী মুহাম্মদ তাকে আবু জেহেল বা মূর্খের পিতা বলে গালি দিতে শুরু করেন। সেই থেকে মুসলমানদের মধ্যে আবু আল-হাকামকে আবু জেহেল নামেই ডাকা হয়। [1] –
নিজ স্ত্রীকে গালাগালি
একজন স্ত্রী যখন সন্তান জন্ম দিতে পারেন না, সমাজে তিনি নানাভাবে অপমানিত এবং অপদস্থ হন এই কারণে। সমাজে তাকে বন্ধ্যা নারী বলে টিটকারি দেয়া হয়, তাকে এই ধরণের শব্দাবলী ব্যবহার করে অপমানিত করা হয়। যেন সন্তান জন্ম দিতে না পারলেই একজন নারীর আর কোন মূল্য নেই! তার জন্য সবচাইতে অপমানজনক এবং অসম্মানজনক গালিই হচ্ছে বন্ধ্যা বলে ডাকা। একজন সন্তানহীন নারীকে কোন মানবিক মানুষই এই কথাটি মনে করিয়ে দেন না। অথচ, নবী নিজেই তার স্ত্রীকে এই নিয়ে খোটা দিতেন, গালি দিতেন! [2] [3] [4] –
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৬/ হাজ্জ
পরিচ্ছদঃ ৬৪. বিদায়ী তাওয়াফ বাধ্যতামুলক কিন্তু ঋতুমতী মহিলার ক্ষেত্রে তা পরিত্যাজ্য
৩০৯৮। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না, ইবনু বাশশার ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) … হাকাম ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রওনা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সাফিয়্যাকে তাঁর তাঁবুর দরজায় চিন্তিতা ও অবসাদগ্রস্তা দেখতে পেলেন। তিনি বললেনঃ বন্ধ্যা, নেড়ি! তুমি আমাদের (এখানে) আটকে রাখবে? তিনি পুনরায় তাকে বললেনঃ তুমি কি কুরবানীর দিন (বায়তুল্লাহ) যিয়ারত করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে রওনা হও।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সুনানে ইবনে মাজাহ
তাওহীদ পাবলিকেশন
অধ্যায়ঃ ১৯/ হজ্জ
পরিচ্ছদঃ ১৯/৮৩. ঋতুবতী স্ত্রীলোক বিদায়ী তাওয়াফ না করে প্রস্থান করতে পারে
২/৩০৭৩। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফিয়্যা (রাঃ) সম্পর্কে জানতে চাইলে আমরা বললাম, সে ঋতুবতী হয়েছে। তিনি বলেনঃ বন্ধ্যা, ন্যাড়া, সে তো আমাদের আটকে ফেলেছে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি কোরবানীর দিন তাওয়াফ করেছেন। তিনি বলেনঃ তাহলে অসুবিধা নেই। তোমরা তাকে রওনা হতে বলো।
সহীহুল বুখারী ৩২৮, ১৫৬১, ১৭৩৩, ১৭৫৭, ১৭৬২, ১৭৭২, ৪৪০১, ৫৩২৯, ৬১৫৭, ৭২২৯, মুসলিম ১২১১, তিরমিযী ৯৪৩, নাসায়ী ৩৯১, আবূ দাউদ ২০০৩, আহমাদ ২৩৫৮১, ২৩৫৮৯, ২৪০০৪, ২৪০৩৭, ২৪১৫৩, ২৪৩৮৫, ২৪৭৮১, ২৪৮৯৭, ২৪৯১৪, ২৪৯৯১, ২৫০৭৫, ২৫১৩৪, ২৫১৯৩, ২৫২৪৯, ২৫৩৪৭,২৫৪১৩, ২৫৬২৮, মুয়াত্তা মালেক ৯৪৩, ৯৪৫, দারেমী ৯৪২, ১৯১৭, ইরওয়া ৪/২৬১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বাপের লিঙ্গ কামড়াতে বলা
বংশ নিয়ে গর্ব করা আমরা যারা মুক্তচিন্তার কথা বলি তারাও সমর্থন করি না। কিন্তু যারা বংশ নিয়ে গর্ব করে, নবী মুহাম্মদ তাদের সম্পর্কে একটি অশালীন কথা বলেছেন। মজার বিষয় হচ্ছে, নবী নিজেই তার কুরাইশ বংশের গর্বে গর্বিত ছিলেন, এবং কুরাইশ বংশকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন করে গেছেন। [5] –
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
পরিচ্ছেদঃ বংশগর্ব
(২০৩৭) উবাই বিন কা’ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কোন লোককে দেখো যে, সে জাহেলিয়াতের বংশ-সম্পর্ক উত্থাপন করছে, তাহলে তোমরা তাকে তার বাপের লিঙ্গ কামড়াতে বলো এবং ইঙ্গিত করো না। (বরং স্পষ্ট বলো)।’
(আহমাদ ২১২৩৬, নাসায়ী কুবরা ১০৮১০, ত্বাবারানী ৫৩২, সহীহুল জামে হা/৫৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)
পুরো গোত্র তুলে গালি দেয়া
বনূ কুরাইযা গোত্র আক্রমণের সময় তাদের বানরের জ্ঞাতিগোষ্ঠী বলে গালাগালি করেছিলেন নবী। কোন সম্প্রদায়কে তাদের ধর্ম বিশ্বাসের কারণে গালাগালি দেয়া, নারী শিশু বৃদ্ধ মানুষ, অপরাধী কিংবা নিরাপরাধ সবাইকে একসাথে, যা অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক এবং নোংরা মন মানসিকতার [6]।
তথ্যসূত্র
- সীরাতুল মুস্তফা সা., লেখকঃ আল্লামা ইদরীস কান্ধলভী (রহ.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৯০ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩০৯৮ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৬৯, হাদিস নম্বরঃ ৩০৯৮ [↑]
- সুনানে ইবনে মাজাহ, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩০৭৩ [↑]
- হাদীস সম্ভার, হাদিস নম্বরঃ ২০৩৭ [↑]
- সিরাতুন নবী (সাঃ), ইবনে হিশাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৩১ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"