এখানে একটি প্রশ্ন আমাদের মনে জাগতেই পারে যে, যেই খাদিজা সর্বদা নবীর সমর্থক ছিলেন, যেই নবী খাদিজাকে এত ভালবাসতেন, তিনি খাদিজার মৃত্যুর কতদিন পরে আয়িশাকে বিবাহ করেছিলেন? সাধারণত আমাদের প্রেমময় স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে, আমরা অনেকেই বহুবছর শোকের মধ্যে থাকি। সেই সময়ে অন্য কোন বিবাহের কথা আমাদের মাথাতেই আসে না। অনেক বছর কেটে গেলে সময়ের সাথে সাথে শোক কমতে থাকলে হয়তো আমাদের মধ্যে অনেকে আবারো বিয়ের কথা ভাবে। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে পরিবারে কোন বাচ্চা থাকলে। বাচ্চাকাচ্চা থাকলে অনেকেই হয়তো খুব দ্রুতই বিয়ে করে ফেলতে পারে। কারণ নতুন স্ত্রী এসে সেই বাচ্চাদের মায়ের আদর দিতে পারবে। কিন্তু আয়িশার ক্ষেত্রে তো সেটিও সম্ভব নয়। কারণ আয়িশা নিজেই ছিলেন শিশু। অন্য শিশুকে দেখভাল বা মায়ের আদর দেয়া তার পক্ষে তো সম্ভব নয়। তাহলে আসুন দেখে নিই, ইসলামের ওপর গবেষকদের মত অনুসারে খাদিজার মৃত্যুর কতদিন পরে মুহাম্মদ আয়িশাকে বিয়ে করেছিল [1] –
অধিকাংশ গবেষকের সিদ্ধান্ত এবং নির্ভরযোগ্য বর্ণনাসমূহের গরিষ্ঠ অংশ যা সমর্থন করে তা হলো, খাদীজা (রা) নুবুওয়াতের দশম বছরে হিজরাতের তিন বছর পূর্বে রমজান মাসে ইনতিকাল করেন এবং তার একমাস পরে শাওয়াল মাসে রাসূলুল্লাহ (সা) আয়িশাকে (রা) বিয়ে করেন। তখন আয়িশার (রা) বয়স ছয় বছর। এই হিসাবে হিজরাত-পূর্ব তিন সনের শাওয়াল, মুতাবিক ৬২০ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে আয়িশার (রা) বিয়ে হয়। আল-ইসতী’য়াব গ্রন্থকার ইবন আবদিল বার এই মত সমর্থন করেছেন। মূলত বিয়ে হয়েছিল খাদীজার (রা) ওফাতের বছরেই এবং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় তিন বছর পরে যখন নয় বছর বয়সে তাঁকে ঘরে তুলে নেন।

খাদিজার মৃত্যুর একমাস পরেই তিনি যেহেতু আয়িশাকে বিবাহ করেন, অর্থাৎ খাদিজার মৃত্যুর পরেই তিনি আয়িশাকে বিবাহের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দেন। এর মধ্যে তিনি বেশ কয়েকবার আয়িশাকে স্বপ্নে দেখেন। বিবাহের চিন্তা মাথায় আসা, প্রস্তুতি, প্রস্তাব পাঠানো, কথাবার্তা বলা, বিবাহের সবকিছু সম্পন্ন করতে নিশ্চয়ই কিছুদিন সময় লাগে। আসুন দেখি এই একমাসের মধ্যেই তিনি কয়েকবার আয়িশাকে স্বপ্নে দেখা শুরু করে দিয়েছিলেন, মিজানুর রহমান আজহারীর মুখে
তথ্যসূত্র
- আসহাবে রাসুলের জীবনকথা, উম্মাহাতুল মু’মিনীন, মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৯ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"