18.ফার্স্টব্লাড কাজিন বিবাহ হালাল

ইসলামে আপন চাচাতো মামাতো খালাতো ফুফাতো ভাইবোন অর্থাৎ রক্তসম্পর্কীয় বিবাহ বৈধ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিশেষভাবে পাকিস্তানে এই ধরণের বিবাহের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে, এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, একইসাথে জন্ম হওয়া শিশুদের মধ্যে নানা ধরণের ভয়াবহ রোগ ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই বিষয়টি ভালভাবে বোঝার জন্য এই লেখাটি পড়তে পারেন [1]। সেইসাথে, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত এই খবরগুলো পড়তে পারেন [2] [3]

জয়নব বিনতে জাহশ (জন্ম আনুমানিক ৫৯০– মৃত্যু ৬৪১) ছিলেন মুহাম্মদ এর ফুফাতো বোন এবং একইসাথে তার স্ত্রী। তার মা ছিলেন উমামা বিনতে আবদুল মুত্তালিব, কুরাইশ গোত্রের হাশিম বংশের সদস্য এবং মুহাম্মদের পিতা আবদুল্লাহর আপন বোন। যয়নব ও তার পাঁচ ভাইবোন ছিলেন মুহাম্মদের ফার্স্ট ব্লাড কাজিন বা আপন চাচাত ভাই বা বোন। একটি হাদিস এখানে প্রাসঙ্গিক,

গ্রন্থের নামঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
হাদিস নম্বরঃ (3298)
অধ্যায়ঃ ১৭। বিবাহ
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
পরিচ্ছদঃ ২. কোন মহিলাকে দেখে কোন পুরুষের মনে যৌন কামনা জাগ্রত হলে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে অথবা ক্রীতদাসীর সাথে গিয়ে মিলিত হয়
৩২৯৮-(৯/১৪০৩) আমর ইবনু আলী (রহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলাকে দেখলেন। তখন তিনি তার স্ত্রী যায়নাব এর নিকট আসলেন। তিনি তখন তার একটি চামড়া পাকা করায় ব্যস্ত ছিলেন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের প্রয়োজন পূরণ করলেন। অতঃপর বের হয়ে সাহাবীগণের নিকট এসে তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোক সামনে আসে শয়ত্বানের বেশে এবং ফিরে যায় শায়ত্বানের বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোন স্ত্রীলোক দেখতে পেলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে। কারণ তা তার মনের ভেতর যা রয়েছে তা দূর করে দেয়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ৩২৭৩, ইসলামীক সেন্টার ৩২৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী ছিলেন নবী মুহাম্মদের আপন চাচাতো ভাই। নবী মুহাম্মদ তার সাথে তার আপন মেয়েকে বিবাহ দিয়েছিলেন।

মুহাম্মাদের কন্যা জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ এর কন্যা ছিলেন উমামা, পুরো নাম উমামা বিনতে আবিল আস মুহাম্মাদ। মুহাম্মদের চাচাতো ভাই এবং একইসাথে মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমার স্বামী হযরত আলী তাকে বিয়ে করেছিলেন। এর অর্থ হচ্ছে, হযরত আলী একই সাথে নবী মুহাম্মদের আপন চাচাতো ভাই, মেয়ের জামাই এবং নাতনীর জামাই।

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমরও বিবাহ করেন তার চাচাতো বোন আতিকা বিনতে যায়েদ ইবনে আমর ইবনে নুফাইলকে। তিনি দেখতে অনেক সুন্দরী ছিলেন। [4]

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এইসব কারণে ফার্স্টব্লাড কাজিনের সাথে বিবাহকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়, অনাগত সন্তানদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে। কিন্তু ইসলামে ফার্স্ট ব্লাড এবং সেকেন্ড ব্লাড কাজিন বিবাহ বৈধ এবং আইনগতভাবে একে নিষিদ্ধ করা কিংবা নিরুৎসাহিত করা কোন ইসলামিক দেশে সম্ভব নয়। এই বিষয়ে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ আলেমদের দ্বারা পরিচালিত প্রখ্যাত ইসলাম বিষয়ক ওয়েবসাইট ইসলামকিউএ থেকে একটি প্রশ্নোত্তর দেখে নিই [5],

Ruling on marrying cousins
Publication : 23-07-1997
Question
Is it correct,that our Rusul , discouraged marrying cousins. You, see marrying cousins should be the last resort.
Jazakallah.
Answer
Praise be to Allah.
Al-hamdu lillah (All praise be to Allah). There is no objection whatsoever in the Islamic religion for a man to marry any of his relatives except al-maharim (those forbidden for marriage) whom Allah mentioned in surat al-nisaa’, 4:23 (interpretation of the meaning):
Prohibited to you (for marriage) are: your mothers, daughters, sisters; father’s sisters, mother’s sisters; brother’s daughters, sister’s daughters; foster-mothers (who breast-fed you), foster-sisters (who breast-fed from the same woman as you); your wives’ mothers; your step-daughters under your guardianship, born of your wives with whom you have consummated marriage, no prohibition if ye have not consummated; (those who have been) wives of your sons proceeding from your loins; and two sisters in wedlock at one and the same time, except for what is past; for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
Thus, when Allah mentioned for us the relatives to whom marriage is forbidden, we then come to know that there is no objection for the remainder of the family relations. Furthermore, there is no condition that it be the last resort as indicated in the question. Among the most prominent evidence of this fact is that the Prophet (peace be upon him) married his daughter Fatima to Ali (may Allah be pleased with them) and he is the son of her father’s uncle, as well as the marriage of the Prophet himself to Zainab bint Jahsh (may Allah be please with her) and she is his aunt’s daughter (i.e. his cousin); and there are many other such examples.
However, a different question may be asked, namely: “Is it better or preferable for a Muslim to marry someone he is not related to rather than a relative?”
The answer to this question varies from case to case, and perhaps it may be preferable to marry people who are non-relations, for example if one aspires to form new social ties or bonds, and regards the existence of a marriage relationship with a different family as constructive in widening the circle of social bonds.

তথ্যসূত্র

  1. ধর্ম ও অজাচার- রক্ত সম্পর্কীয় বিবাহ এবং যৌনতা প্রসঙ্গে []
  2. Inside the incestuous family that was so inbred their skin turned blue []
  3. America’s most inbred family who speak in grunts started with identical twin brothers []
  4. al-Bidayah wa al-Nihayah 6/352 by ibn Kathir []
  5. Ruling on marrying cousins []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"