ইসলাম মদের সর্বপ্রকার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র উদ্ভটই নয়, হাস্যকরও বটে। এই বিধান আমাদের বাস্তব জীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে, কারণ এলকোহল নানাবিধ কাজে আমাদের অপরিহার্য। বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি এবং ফ্যাক্টরিতে এলকোহলের গুরুত্ব অপরিসীম। উদাহরণস্বরূপ, পারফিউম, কসমেটিকস, এবং স্যানিটাইজারের মতো পণ্য উৎপাদনে এলকোহল একটি প্রধান উপাদান। এছাড়া, খাদ্য শিল্পেও এলকোহল সংরক্ষণ ও স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে এলকোহলের কোন বিকল্প নেই। জীবাণুমুক্তকরণে এলকোহল অত্যন্ত কার্যকর, যা সার্জারি এবং বিভিন্ন চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। ইনজেকশন দেওয়ার আগে ত্বক জীবাণুমুক্ত করতে এলকোহল ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতিতে এবং হোমিওপ্যাথিতে এলকোহল একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এলকোহল অপরিহার্য। রাসায়নিক বিশ্লেষণ, নমুনা সংরক্ষণ, এবং বিভিন্ন পরীক্ষায় এলকোহল ব্যবহৃত হয়। গবেষণাগারে এলকোহল ছাড়া অনেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা অসম্ভব। এছাড়া, জৈব জ্বালানি উৎপাদনেও এলকোহল ব্যবহৃত হয়, যা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসাবে পরিচিত।
অথচ, ইসলাম এমনকি চিকিৎসার জন্যও মদ বা এলকোহলকে হারাম করে দিয়েছে। এটি বাস্তবসম্মত নয়, কারণ এলকোহলকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা সম্ভব নয়। আধুনিক জীবনে এলকোহলের বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে, যা আমাদের উন্নতি এবং স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই নিষেধাজ্ঞা মানবকল্যাণ ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজের পরিপন্থী। যদি রোগীর জীবন রক্ষার জন্য এলকোহল ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, তবে তা নিষিদ্ধ করা নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া, শিল্প ও গবেষণায় এলকোহলের ব্যবহার বন্ধ করলে প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে [1] [2] [3] [4]
হাদীস সম্ভার
২৩/ বাণিজ্য ও উপার্জন
পরিচ্ছেদঃ ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কিত কিছু বিধি-নিষেধ
(২৪৯৫) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মদ পানকারীকে, মদ পরিবেশনকারীকে, তার ক্রেতা ও বিক্রেতাকে, তার প্রস্তুতকারককে, যার জন্য প্রস্তুত করা হয় তাকে, তার বাহককে ও যার জন্য বহন করা হয় তাকে আল্লাহ অভিশাপ করেছেন।
(আবূ দাউদ ৩৬৭৬, ইবনে মাজাহ ৩৩৮০) ইবনে মাজার বর্ণনায় আছে, তার মূল্য ভক্ষণকারীও (অভিশপ্ত)। (সহীহুল জামে’ ৫০৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৩৭। পানীয় বস্তু
পরিচ্ছেদঃ ৩. মদ দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম
হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৫০৩৫, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১৯৮৪
৫০৩৫-(১২/১৯৮৪) মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ….. ওয়ায়িল আল-হাযরামী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তারিক ইবনু সুওয়াইদ জুকী (রাযিঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মদ সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি তাকে বারণ করলেন, কিংবা মদ প্রস্তুত করাকে খুব জঘন্য মনে করলেন। তিনি [তারিক (রাযিঃ)] বললেন, আমি তো শুধু ঔষধ তৈরি করার জন্য মদ প্রস্তুত করি। তিনি বললেনঃ এটি তো (ব্যাধি নিরামক) ঔষধ নয়, বরং এটি নিজেই ব্যাধি। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪৯৭৭, ইসলামিক সেন্টার ৪৯৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ওয়ায়ল হাযরামী (রাঃ)
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ – মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৪২-[৯] ওয়ায়িল আল হাযরামী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ত্বারিক ইবনু সুওয়াইদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মদ ব্যবহারের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা ব্যবহার করতে নিষেধ করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তবে আমি যদি তা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা প্রতিষেধক নয়; বরং স্বয়ং ব্যাধি। (মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : মুসলিম ১৯৮৪, শারহুস্ সুন্নাহ্ ২৫৬৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ওয়ায়ল হাযরামী (রাঃ)
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৭/ পানীয় দ্রব্য
পরিচ্ছেদঃ ৩. মদদ্বারা চিকিৎসা করা হারাম এবং তা ঔষধ হতে না পারার বিবরণ
৪৯৭৭। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ওয়াল আল-হাযরামী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তারিক ইবনু সুওয়ায়দ জুফী (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মদ সন্মন্ধে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি তাঁকে নিষেধ করলেন, অথবা মদ প্রস্তুত করাকে খুব খারাপ মনে করলেন। তিনি তারিক (রাঃ) বললেন, আমি তো ঔষধ প্রস্তুত করার জন্য মদ বানাই। তিনি বললেনঃ এটি তো (রোগ নিরামক) ঔষধ নয়, বরং এটি নিজেই রোগ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ ওয়ায়ল হাযরামী (রাঃ)
তথ্যসূত্র
- হাদীস সম্ভার, হাদিসঃ ২৪৯৫ [↑]
- সহীহ মুসলিম, হাদীস একাডেমী, হাদিসঃ ৫০৩৫ [↑]
- মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিসঃ ৩৬৪২ [↑]
- সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৪৯৭৭ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"