Red Herring কুযুক্তি তখন ঘটে যখন কেউ মূল তর্ক বা প্রশ্ন থেকে মনোযোগ সরিয়ে ভিন্ন, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিয়ে যায়। এটি যুক্তির একটি বিকৃত রূপ, যেখানে প্রাথমিক প্রশ্ন বা দাবির যথাযথ জবাব না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে যাওয়া হয়।
কেন Red Herring কুযুক্তি একটি ফ্যালাসি?
Red Herring fallacy যুক্তি বা আলোচনা ভিন্ন পথে নিয়ে গিয়ে মূল সমস্যাটি সমাধান বা পরিষ্কার করতে বাধা সৃষ্টি করে। এটি জ্ঞানের পরিসরে একটি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং সত্য থেকে দূরে সরিয়ে ফেলে। যুক্তিতর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা, কারণ শ্রোতারা মূল প্রসঙ্গ থেকে বিচ্যুত হয়ে ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে।
- উদাহরণ ১: ভুতের অস্তিত্বের প্রসঙ্গ
- দাবীঃ আমার মনে হয় ভুত আছে।
- প্রশ্নঃ ভুত যে আছে, তার প্রমাণ কী?
- দাবীঃ এই যে আমরা জন্মেছি, মারা যাচ্ছি, এগুলো তো সত্য, তাই না? মারা যে যাচ্ছি, আমরা কোথায় যাচ্ছি?
- উপরের দাবীগুলো লক্ষ্য করুন। দাবীকারী প্রথমে বললো ভুত আছে। প্রমাণ চাওয়া মাত্রই তিনি আলোচনা ভিন্ন একদিকে নিয়ে গেলেন, যেই আলোচনায় তার কথাগুলো আপাত দৃষ্টিতে যৌক্তিক মনে হলেও, তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবেই আসলে জন্ম মৃত্যুর প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন। যার সাথে ভুত থাকা না থাকা সম্পর্কহীন। পরের ধাপে তিনি যতই যৌক্তিক কথা বলুন না কেন, তার সকল যুক্তিই কুযুক্তি বা ফ্যালাসি বলে বিবেচিত হবে। কারণ তিনি মূল প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে অন্যদিকে চলে গেছেন।
- উদাহরণ ২: রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ইস্যু
- একজন রাজনীতিবিদ যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশ্নের জবাবে আগের সরকারের সমালোচনা বা জনস্বাস্থ্য বা ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা শুরু করেন, তখন এটি Red Herring fallacy-এর উদাহরণ। মূল প্রশ্ন অর্থনীতির উপর ভিত্তি করে, কিন্তু মনোযোগ সরিয়ে অন্য প্রসঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
- উদাহরণ ৩: পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন
- ধরা যাক, কেউ প্রশ্ন তুলল, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ কী? এর উত্তরে যদি বলা হয়, “মানুষের সামাজিক আচরণের পরিবর্তন ঘটেছে, এটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ,” এবং এরপরে যদি মূল প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে মানুষের সামাজিক আচরণ নিয়ে বক্তা কথা বলতে শুরু করে, সেই কথাগুলো যত যৌক্তিকই হোক না কেন, সেগুলো এক একটি Red Herring। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশ্নে সামাজিক আচরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও, এটি মূল প্রশ্নের সরাসরি জবাব নয়।
উপসংহার:
Red Herring fallacy একটি সাধারণ কৌশল যা মূল প্রসঙ্গ থেকে সরিয়ে দেয় এবং আলোচনাকে বিভ্রান্ত করে। এটি যুক্তির প্রকৃত উদ্দেশ্যকে নষ্ট করে দেয় এবং মানুষকে সত্য জানতে বাধা দেয়। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এই ধরনের কুযুক্তিকে শনাক্ত করা এবং এড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।