03.সূর্যকে থামিয়ে দিয়েছিল নবী

বেশ কয়েকটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে, একজন নবী একবার চলন্ত সূর্যকে থামিয়ে দিয়েছিলেন। সূর্য নাকি নবীর নির্দেশ মোতাবেক বেশ কিছু সময় থেমে এক জায়গাতেই থমকে ছিল! এর অর্থ হচ্ছে, নবী পৃথিবীর ঘুর্ণনকেই আসলে থামিয়ে দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ঘুর্ণন থামলেই, পৃথিবী থেকে সূর্যকে স্থির বলে মনে হবে। কিন্তু আমরা জানি যে, পৃথিবীর ঘুর্ণন এক সেকেন্ডের জন্যেও যদি থামে, তাহলে পুরো পৃথিবীব্যাপী মহা দুর্যোগ দেখা দেবে। সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ব্যাপক প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিবে।

পৃথিবীর পৃষ্ঠের সকল বস্তু পূর্বদিকে অত্যন্ত দ্রুতবেগে ছুটে যাবে, কারণ তারা পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে ইতিমধ্যে গতিশীল। পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হওয়ার ফলে মহাকর্ষের পরিবর্তনও হবে। যদি পৃথিবী হঠাৎ করে ঘোরা বন্ধ করে, তাহলে পার্শ্বিক মহাকর্ষ হ্রাস পাবে এবং পৃথিবী একটি ডিম্বাকৃতি আকারে প্রসারিত হতে শুরু করবে। পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হওয়ার ফলে আবহাওয়াও ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হবে। পৃথিবীর ঘূর্ণন বায়ু এবং জলপ্রবাহকে সৃষ্টি করে। যদি পৃথিবী হঠাৎ করে ঘোরা বন্ধ করে, তাহলে বায়ু এবং জলপ্রবাহ থেমে যাবে এবং আবহাওয়া স্থির হয়ে যাবে।

সামগ্রিকভাবে, পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হওয়ার ফলে খুবই নেতিবাচক পরিণতি হবে। এটি ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক ঘটনা হবে এবং পৃথিবীতে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। আসুন আমরা এই বিষয়টি আগে একটি ভিডিও থেকে দেখে নিই,

এবারে আসুন এই বিষয়ে ইসলামিক দলিগুলো দেখে নেয়া যাক, [1] [2]

সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৫৭/ খুমুস (এক পঞ্চমাংশ)
পরিচ্ছেদঃ ৫৭/৮. নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ তোমাদের জন্য গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে।
৩১২৪. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোন একজন নবী জিহাদ করেছিলেন। তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, এমন কোন ব্যক্তি আমার অনুসরণ করবে না, যে কোন মহিলাকে বিবাহ করেছে এবং তার সঙ্গে মিলিত হবার ইচ্ছা রাখে, কিন্তু সে এখনো মিলিত হয়নি। এমন ব্যক্তিও না যে ঘর তৈরি করেছে কিন্তু তার ছাদ তোলেনি। আর এমন ব্যক্তিও না যে গর্ভবতী ছাগল বা উটনী কিনেছে এবং সে তার প্রসবের অপেক্ষায় আছে। অতঃপর তিনি জিহাদে গেলেন এবং ‘আসরের সালাতের সময় কিংবা এর কাছাকাছি সময়ে একটি জনপদের নিকটে আসলেন। তখন তিনি সূর্যকে বললেন, তুমিও আদেশ পালনকারী আর আমিও আদেশ পালনকারী। হে আল্লাহ্! সূর্যকে থামিয়ে দিন। তখন তাকে থামিয়ে দেয়া হল। অবশেষে আল্লাহ তাকে বিজয় দান করেন। অতঃপর তিনি গানীমাত একত্র করলেন। তখন সেগুলো জ্বালিয়ে দিতে আগুন এল কিন্তু আগুন তা জ্বালিয়ে দিল না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, তোমাদের মধ্যে (গানীমাতের) আত্মসাৎকারী রয়েছে। প্রত্যেক গোত্র হতে একজন যেন আমার নিকট বায়‘আত করে। সে সময় একজনের হাত নবীর হাতের সঙ্গে আটকে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যেই আত্মসাৎকারী রয়েছে। কাজেই তোমার গোত্রের লোকেরা যেন আমার নিকট বায়‘আত করে। এ সময় দু’ ব্যক্তির বা তিন ব্যক্তির হাত তাঁর হাতের সঙ্গে আটকে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যেই আত্মসাৎকারী রয়েছে। অবশেষে তারা একটি গাভীর মস্তক পরিমাণ স্বর্ণ উপস্থিত করল এবং তা রেখে দিল। অতঃপর আগুন এসে তা জ্বালিয়ে ফেলল। অতঃপর আল্লাহ আমাদের জন্য গানীমাত হালাল করে দিলেন এবং আমাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা লক্ষ্য করে তা আমাদের জন্য তা হালাল করে দিলেন। (৫১৫৭) (মুসলিম ৩২/১১ হাঃ ১৭৪৭, আহমাদ ৮২৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৮৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

ইসলামের প্রখ্যাত একটি গ্রন্থ আশ শিফা যার লেখক হলেন বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার আল্লামা ইমাম কাজী আয়াজ আন্দুলুসী। উনার গ্রন্থ থেকে আসুন পুরো বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে দেখে নিই [3]

1
3
5

তথ্যসূত্র

  1. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩১২৪ []
  2. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৯০৪ []
  3. আশ-শিফা, প্রথম খণ্ড, সনজরী পাবলিকেশন্স, ইমাম কাযী আয়ায আন্দুলুসী, পৃষ্ঠা ৫৯৩, ৫৯৪, ৫৯৫ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"