06.কোরআনে ভুল – উসমানের স্বীকারোক্তি

কোরআনকে ইসলামের অনুসারীরা নির্ভুল, অনন্ত এবং আল্লাহর সরাসরি বাণী হিসেবে মেনে নেন, যা তাদের দাবী অনুসারে যেকোনো ভুল বা অসামঞ্জস্যতা থেকে মুক্ত। কিন্তু কোরআনের সংকলনকারী হযরত উসমান নিজেই এক পর্যায়ে স্বীকার করেছিলেন যে, কোরআনে কিছু শব্দ উচ্চারণের ভুল বা অসামঞ্জস্যতা রয়ে গেছে, যা শুধরে নেওয়া দরকার ছিল। যখন তাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, “এভাবেই সেগুলো থাকতে দাও, কারণ এতে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন বা ক্ষতি হবে না; হালালকে হারাম বা হারামকে হালাল করা হচ্ছে না।” এমন বক্তব্য একদিকে যেমন কোরআনের নির্ভুলতার দাবিকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তেমনি কোরআনের ঐশ্বরিকতা এবং এর নির্ভুলতা সম্পর্কেও সন্দেহের সৃষ্টি করে। যদি আল্লাহর বাণী “লাওহে মাহফুজ”-এ অক্ষতভাবে সংরক্ষিত থেকে থাকে, তবে কেন এমন ত্রুটিপূর্ণ উচ্চারণ কোরআনের পাঠে অন্তর্ভুক্ত হলো? একজন মানুষের মতো করে আল্লাহর বাণীতে ত্রুটি থাকা কি আসলেই সম্ভব? এবং যদি উসমানের মতো একজন খলিফা ভুলকে সঠিক করে দেওয়ার পরিবর্তে তা বজায় রাখতে বলেন, তবে কিভাবে এটি নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য ধর্মগ্রন্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে? এই ঘটনাটি কেবলমাত্র কোরআনের নির্ভুলতার মিথকে ভেঙে দেয় না, বরং এটি প্রমাণ করে যে, কোরআন সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত বা অবিকৃত নয়। আল্লাহর বাণী হিসেবে দাবি করা একটি গ্রন্থে যদি উচ্চারণগত ভুল থেকে যায়, তবে তা কি আসলেই ঐশ্বরিক ও অনন্ত হতে পারে? কারণ ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসই হচ্ছে, কোরআনে সামান্যতমও কোন বিকৃতি নেই! এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে কোরআনের ঐশ্বরিকতার দাবির ভিত্তিই দুর্বল বলে প্রতীয়মান হয় [1]

কোরআন 34
কোরআনে ভুল নিয়ে উসমানের স্বীকৃতি

তথ্যসূত্র

  1. তাফসীরে মাযহারী, আল্লামা কাজী মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ পানিপথী, হাকিমাবাদ খানকায়ে মোজাদ্দেদিয়া প্রকাশনী, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৪৮-৩৪৯ []


সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"