মুসলিম ঐতিহ্যে প্রথম চার খলিফার শাসনামলকে “সোনালী যুগ” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দাবি করা হয়, এই সময় ন্যায়বিচার, সাম্য এবং শাসনব্যবস্থার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছিল। তবে ইতিহাসের নিরপেক্ষ পর্যালোচনা করলে, এমন কিছু ঘটনা পাওয়া যায় যা এই দাবির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ উমরের হত্যাকাণ্ড পরবর্তী ঘটনা।
উমরের হত্যার প্রতিশোধ নিতে তার পুত্র উবায়দুল্লাহ ইবনে উমর আবু লুলুর কিশোরী কন্যাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কোনও যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা নেই। কিশোরী মেয়েটি শুধুমাত্র হত্যাকারীর কন্যা হওয়া ছাড়া আর কোনও অপরাধে অভিযুক্ত ছিল না। এর পরও উসমান, যিনি তৎকালীন খলিফা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন, এই হত্যার জন্য উবায়দুল্লাহ ইবনে উমরকে কোনও বিচারিক প্রক্রিয়ার মুখোমুখি না করে ক্ষমা ঘোষণা করেন।
এই ঘটনাটি গভীর নৈতিক ও শাসনগত প্রশ্ন উত্থাপন করে। একজন শাসক হিসেবে উসমানের দায়িত্ব ছিল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং কোনও ব্যক্তিকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত রাখা। কিন্তু এর বিপরীতে তিনি ক্ষমার মাধ্যমে উবায়দুল্লাহর অপরাধকে বৈধতা দিলেন, যা ন্যায়বিচারের ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। এই ধরনের ঘটনা ইসলামী খিলাফতের সোনালী যুগের দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এটা দেখায় যে, সেই সময়ের শাসনব্যবস্থা নিখুঁত বা অসাধারণ তো ছিলই না বরং ব্যক্তিগত প্রভাব এবং রাজনৈতিক স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। ফিকহে ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু গ্রন্থ থেকে উসমানের শাসনামলের এই ঘটনা জেনে নিই [1] –



তথ্যসূত্র
- ফিকহে ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু, ড মুহাম্মদ রাওয়াস কালা’জী, ভাষান্তর ও সম্পাদনাঃ মুহাম্মদ খলিলুল রহমান মুমিন, আধুনিক প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ১৫২, ১৫৩, ১৫৪ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"