ইসলামের শরীয়তে একজন অমুসলিমের সাক্ষ্যকে মুসলিমের বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য না হওয়া অত্যন্ত বৈষম্যমূলক, বিভেদমূলক এবং নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য একটি আইন। এটি একটি গভীর বৈষম্যমূলক নীতি, যেখানে একজন নিরপরাধ অমুসলিমকে তার সঠিক বক্তব্য ও সাক্ষ্য দেওয়ার অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়, শুধুমাত্র তার ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে। এমন একটি আইন, যা ধর্মের ভিত্তিতে ন্যায়বিচারকে প্রভাবিত করে, তা সমাজে ধর্মীয় অসাম্য ও অবিচারের উদাহরণ স্থাপন করে। এই নিয়ম অনুসারে, একজন মুসলিম যদি কোনো অমুসলিম পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে এবং সেই পরিবারের জীবিত সদস্যরা সেই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী হয়, তবুও ইসলামি আইন অনুযায়ী তাদের সাক্ষ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে না, যতক্ষণ না কোন মুসলিম এই বিষয়টি দেখবে এবং সাক্ষ্য দিবে। অর্থাৎ, একজন মুসলিম অপরাধী হলেও সে ইসলামি আদালতে তার ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে রেহাই পেতে পারে, যা শুধু অমুসলিমদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের জন্যই হুমকিস্বরূপ নয়, বরং এটি সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকেও সম্পূর্ণরূপে বাঁধাগ্রস্ত করে। এমন আইন শুধু মুসলিমদের এক ধরনের বিশেষ অধিকার প্রদান করে এবং অমুসলিমদের অধিকার ও মর্যাদাকে সম্পূর্ণরূপে অবমাননা করে।
ধর্মের নামে এ ধরনের বৈষম্যমূলক নীতি কি আসলেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম? একটি ন্যায়সঙ্গত সমাজ কি ধর্মীয় পরিচয় অনুযায়ী বিচারব্যবস্থাকে পরিচালিত করবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে, ইসলামি আইন প্রণয়নকারীদের এমন নিয়মের পেছনে যুক্তি খোঁজা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ এ ধরনের আইন শুধুমাত্র একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে সুবিধা দেয়, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং প্রকৃত ন্যায়বিচারের পরিপন্থী [1] –
তথ্যসূত্র
- ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পঞ্চম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৭০ [↑]
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ "সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন"